দেশে ফাইভজি মোবাইল ফোনের উৎপাদন বেড়েছে। সর্বশেষ মার্চে দেশে ৩৯ হাজার ফাইভজি সুবিধা সংবলিত মোবাইল ফোন উৎপাদন হয়েছে। বছরের প্রথম দুই মাস অর্থাৎ, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ২ হাজার ৬০০টির ঘরে। সে হিসাবে মার্চে এক লাফে ৩৭ হাজার ফাইভজি মোবাইল ফোন দেশে বেশি তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে মার্চে ফোরজি মোবাইল ফোনের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৯০ হাজার। সর্বশেষ মার্চে দেশে ফোরজি মোবাইল ফোন উৎপাদিত হয়েছে ৮ লাখ ৩২ হাজার। তার আগের মাস অর্থাৎ, ফেব্রুয়ারিতে ফোরজি মোবাইল উৎপাদন হয়েছিল ৯ লাখ ২২ হাজার। উৎপাদনকারীরা বলছেন, গ্রাহকের চাহিদা বিবেচনায় ফাইভজি মোবাইল ফোনের উৎপাদন বাড়াচ্ছেন তারা। যদিও দেশের বাজারে অবৈধ মোবাইল ফোনের ছড়াছড়ির কারণে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোবাইল ফোনের চাহিদা কম। এজন্য তারা উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রতিমাসে দেশে মোবাইল ফোনের উৎপাদন কত, সে তথ্য প্রকাশ করে থাকে। সর্বশেষ মার্চ মাসের তথ্য প্রকাশ করেছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মার্চে দেশে টুজি মোবাইল ফোন উৎপাদিত হয়েছে ১১ লাখ ৬৪ হাজার। ফোরজি মোবাইল ফোন ৮ লাখ ৩২ হাজার এবং ৩৯ হাজার ফাইভজি মোবাইল ফোন উৎপাদিত হয়েছে। মোট উৎপাদিত মোবাইল ফোনের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৫ হাজার। এরমধ্যে ফিচার ফোন (টুজি) বেশি, শতাংশের হিসাবে যা ৫৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। বাকি ৪২ দশমিক ৮২ শতাংশ স্মার্ট ফোন।
এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে দেশে মোট ২১ লাখ ৪৭ হাজার মোবাইল ফোন উৎপাদন হয়েছিল। এরমধ্যে টুজি মোবাইল ফোন ছিল ১২ লাখ ২২ হাজার, ফোরজি ৯ লাখ ২২ হাজার এবং ফাইভজি ২ হাজার ৬৬০টি। ফেব্রুয়ারিতে উৎপাদিত মোবাইল ফোনের মধ্যে ফিচার ফোন (টুজি) ছিল ৫৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং স্মার্ট ফোন ছিল ৪৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। গত ৩ মাসে দেশে মোবাইল ফোনের উৎপাদন বেড়েছে। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে মোবাইল ফোনের উৎপাদন ছিল ১৮ লাখ ৯২ হাজার। মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৩৫ হাজার। অর্থাৎ, তিনমাসে দেশে মোবাইল ফোনের উৎপাদন বেড়েছে এক লাখ ৪৩ হাজারের বেশি।
একই সময়ে টুজি ফোনের উৎপাদন কমলেও ফোরজি ও ফাইভজির উৎপাদন বেড়েছে। জানুয়ারিতে উৎপাদিত মোট মোবাইল ফোনের মাত্র ১৮ দশমিক ৮০ শতাংশ ছিল স্মার্ট ফোন। অথচ মার্চে মোট উৎপাদিত ফোনের ৪২ দশমিক ৮২ শতাংশই স্মার্ট ফোন। অর্থাৎ, স্মার্ট ফোনের উৎপাদন প্রায় ২৪ শতাংশ বেড়েছে। জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ১৭টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ফোন উৎপাদন করছে। দেশে যে পরিমাণ চাহিদা, তার প্রায় ৯০ শতাংশই এ উৎপাদনকারীরা মেটাতে পারেন বলে দাবি তাদের। ২০১৭ সালে উৎপাদনের অনুমোদন পাওয়ার পর থেকে শুরুতে ভালো অবস্থা থাকলেও এখন উৎপাদন কমতির দিকে। এ নিয়ে হতাশ উৎপাদকরা।
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমআইওবি) নেতাদের দাবি, মোবাইল ফোনের অবৈধ বাজারের কারণে তাদের ব্যবসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি জাকারিয়া শহীদবলেন, দেশে অবৈধ মোবাইল ফোনের বাজার এখনো রমরমা। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশীয় উৎপাদকরা আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বেন। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে উৎপাদন বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদের মৌসুমে মোবাইল ফোনের চাহিদা বাড়ে। এজন্য মার্চ-এপ্রিলে উৎপাদন বেড়েছে। পরপর দুটি ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন উৎসব রয়েছে। অর্থাৎ, বছরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে চাহিদার সঙ্গে উৎপাদনও বাড়বে।