বাংলাদেশের খাল, বিল, নদী বা জলাশয়ে কচুরিপানা দেখা যায়। সবুজ পাতার মাঝে হালকা বেগুনি কচুরিপানার ফুল। সেই কচুরিপানা এখন বাগানেও চাষ হচ্ছে। ড্রাম, বালতি বা সিমেন্টের পাত্রে। কুমিল্লা সদর উপজেলার গুণানন্দী গ্রামের একটি বাগানে কচুরিপানার চাষ করতে দেখা গেছে। কুমিল্লা গার্ডেনার্স সোসাইটির পরিচালক ডা. আবু নাঈম অন্যান্য উদ্ভিদের সঙ্গে এই কচুরিপানার চাষ করেন। তার বাগানে রয়েছে পাঁচ প্রজাতির কচুরিপানা। কোনোটি সাদা, কোনোটি নীল ও বেগুনি। খরতাপেও স্নিগ্ধতা ছড়াচ্ছে ফুলগুলো।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, বাংলাদেশের জলাশয়ে এখন যে কচুরিপানা ভাসতে দেখা যায়, দেড় শ বছর আগে এর কোনো অস্তিত্ব এ অ লে ছিল না। ১৮০০ সালের শেষভাগে ব্রাজিল থেকে কচুরিপানা নিয়ে আসা হয়েছিল। মূলত অ্যামাজন জঙ্গলের জলাশয়ে থাকা উদ্ভিদ এটি। জর্জ মরগান নামে এক স্কটিশ ব্যবসায়ী ব্রাজিল থেকে বাংলাদেশে কচুরিপানা নিয়ে আসেন। অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জের একজন পাট ব্যবসায়ী অস্ট্রেলিয়া থেকে এ কচুরিপানা বাংলায় এনেছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এটি সার হিসেবেই বেশি ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া বায়োগ্যাস উৎপাদনেও ব্যবহৃত হচ্ছে। গবাদি পশুর খাবারে কচুরিপানা যোগ করা হয়। এ ছাড়া শুকনো কচুরিপানা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
ডা. আবু নাঈম বলেন, কচুরিপানা খুবই সহনশীল এবং দ্রুত বর্ধনশীল উদ্ভিদ। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এ একটিমাত্র উদ্ভিদ ৫০ দিনে ৩ হাজারের বেশি সংখ্যায় বিস্তুৃত এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে যেতে পারে। কচুরিপানার ফুলের এক প্রকারের স্নিগ্ধতা রয়েছে। যা দর্শনার্থীকে মুহূর্তেই বিমোহিত করে। তাই বিভিন্ন প্রকারের কচুরিপানা সংগ্রহ করে বাগানে লাগিয়েছি। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, কুমিল্লায় কর্মরত থাকাকালীন ডা. আবু নাঈমের কাজ দেখেছি। তিনি ব্যতিক্রম সব উদ্ভিদ সংগ্রহ করেন। তার এ শুভ উদ্যোগ বেঁচে থাকুক।