রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
আমার কথা বলে চাঁদা-সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশে দিন : আসিফ নজরুল তিস্তার পানি দ্রুত বাড়ছে আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন মাহমুদুর রহমান ঢাকার খাল দিয়ে ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে সরকার : পানিসম্পদ উপদেষ্টা শিক্ষাব্যবস্থায় হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ বরদাস্ত করা হবে না : মামুনুল হক নৌকা থাকায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন হতে পারে : উপদেষ্টা আদর্শিক ভিন্নতা থাকলেও সবাই একসঙ্গে জাতি গঠনে কাজ করবে: মঞ্জুরুল ইসলাম জাতিসংঘে ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা মাহমুদ আব্বাসের মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আব্দুল গফুরের দাফন ছাত্র-জনতার অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয় স্বৈরাচার থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছে

মমতা নয়, ভারত সরকারের কারণে তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪

ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের ওয়েবিনার প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল

পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনীহার কারণেই তিস্তাচুক্তি হচ্ছে না বলে মন্তব্য করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ভারতের সংবিধান দেখলে দেখতে পাবেন যে আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পূর্ণভাবে ফেডারেল সরকারের আওতাভুক্ত। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তি থাকলে ভারত সরকার চুক্তি করতে পারবে না এটা যদি কেউ মনে করি তাহলে আমি বলবো আমাদের ফেডারেল গভর্নমেন্ট সম্পর্কে ধারণার অভাব আছে। এমন হলেতো ফেডারেল সরকার কোনো কাজই করতে পারবে না। মূলত চুক্তিটা হচ্ছে না ভারত সরকারের কারণে, কোনো রাজ্যের সরকারের জন্য না। রোববার ‘বাংলাদেশ-ভারত পানি বণ্টন অভিজ্ঞতা, আশঙ্কা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিক মনির হায়দারের সঞ্চালনায় এতে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত, কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মো. খালেকুজ্জামান, ওয়াটার্সকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল। সমাপনী বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রিয়াজ। ড. আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশের সাথে ভারতের ৫৪ অভিন্ন নদী রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একটি নদীর ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে পূর্ণ চুক্তি রয়েছে।
এর বাইরে অন্যান্য নদী নিয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু কোনো চুক্তি হয়নি। এমনকি তিস্তা নিয়ে ১৯৮৪ সালের আগ থেকে আলোচনা চলছে কিন্তু আজ পর্যন্ত হয়নি। ২০১১ সালে একটা চুক্তি হয়ে যাচ্ছিল কিন্তু হয়নি। সেখানে কমন একটা মিস আন্ডারস্টান্ডিং আছে যে পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির জন্য হয়নি। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক মিটিংগুলো দেখলে দেখা যাবে কোনো মিটিংয়েরই মূল এজেন্ডাতে তিস্তার বিষয় দেখতে পাওয়া যায় না। সাইড টক হিসেবে বা অপেক্ষাকৃত গুরুত্বহীন আলোচনায় মাঝে মাঝে আশ্বাস দেয়া হয় কিন্তু এজেন্ডাতে থাকে না। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ভারতের নদী চুক্তি বা নদী ভাগাভাগির ভিত্তিটা কী?
ওয়েবিনারে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, তিস্তার ক্ষেত্রে গতকাল (শনিবার) যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তাতে আমি অত্যন্ত লজ্জিত ও দুঃখিত। সেখানে বলা হয়েছে তিস্তার বাংলাদেশের যে অংশ সে অংশের পানি ব্যবস্থাপনা ও পানি সংরক্ষণে দুই দেশের কারিগরি দল কথাবার্তা বলবে। বাংলাদেশে হিলট্রাক্স ছাড়া সংরক্ষণের জায়গা নেই। বলা হচ্ছে আমরা ড্রেজিং করলে সমাধান হবে। কিন্তু ড্রেজিং করলেতো পানি উৎপাদন হবে না। কাজেই ভারতের সঙ্গে পানি বণ্টন চুক্তিটা এন্টেরিয়াম হলেও করে নিতে হবে। একই সঙ্গে এটি যেন সময়ের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকে। আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল হয়েছে ১৯৭৭ সালে। ওই চুক্তিটায় আমরা আমাদের পায়ে কুড়াল মেরেছি। তার আগে ১৯৭৪ সালের ১৮ই এপ্রিল নিজেরা নিজেদের পায়ে কুড়াল মেরেছি। আবার ১৯৯৬ সালের গঙ্গাচুক্তিটাও আমরা ৩০ বছরের জন্য করেছি। যদিও সেটিতে আমি নিজেও যুক্ত ছিলাম। তাই নতুন করে গঙ্গা চুক্তিতে যেন সেই সময়ের বাধা না থাকে।
তিনি বলেন, পানির ন্যায্য বণ্টনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষতির বিষয়ে শুধু কারিগরি বা কূটনৈতিক আলোচনা করে সুফল মিলবে না। এ জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জরুরি। তিনি বলেন, কূটনীতিক দিক গুরুত্বপূর্ণ। তারা দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে। বিভিন্ন তথ্যের আদান-প্রদান করে। তাদের তথ্য তৈরি করার ক্ষমতা নেই। তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। সবচেয়ে বড় কথা এ সিদ্ধান্ত হতে হবে রাজনৈতিকভাবে। ১৯৭৪, ১৯৭৭, ১৯৯৬ সালের যে চুক্তিগুলো হয়েছে সবগুলোই রাজনৈতিকভাবে করা হয়েছে। এখন আমাদের পলিটিক্যাল এপ্রোচের ক্ষেত্র তৈরি করে দেবেন কারিগরি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সেক্ষেত্রে তারাতো খোলাখুলি কথা বলতে পারেন না। আইনুন নিশাত বলেন, এর সাথে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দিক রয়েছে। আমি যদি পানি সংরক্ষণের জন্য বর্ষার অতিরিক্ত পানি জলাধারে ধরে রাখতে চাই তাহলে সেখানে পরিবেশ ও সামাজিক সমস্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। সেটাকে বিবেচনায় রেখে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বাংলাদেশে সবচেয়ে দুর্বল ডিপার্টমেন্ট হচ্ছে পানি মন্ত্রণালয় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাদের কোনো কথাবার্তা শুনিই না। তারা সবসময় ঝুঁকিতে থাকেন এ বুঝি কোনো একটা ভুল হয়ে গেলো। তাদেরকে বকাবুকি করা হবে।
প্রফেসর আলী রিয়াজ বলেন, জনগণের ম্যান্ডেট না থাকায় পানির ন্যায্যতা নিয়ে সোচ্চার নয় সরকার। জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে পানির ন্যায্য হিস্যার জন্য চীন, ভুটান ও নেপালের মতো তৃতীয় পক্ষকে অন্তর্ভুক্তি থাকতে হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com