নীলফামারী ডোমারে মনের মাধুরি দিয়ে দৃষ্টি নন্দন হিসাবে গড়ে তুলেছেন নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপজেলার ছোট রাউতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজিরা আখতার ফেরদৌসী চৌধুরী। বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান, পরিবেশ, শতভাগ স্কুল ড্রেসসহ ফুলের বাগান, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ব্যপক ভুমিকা রেখে গোটা উপজেলায় প্রশংসার জোয়ারে ভাষছেন এই গুণি শিক্ষক। শিশুদের কারিগর ফেরদৌসী ম্যাডাম, তার সারাদিনের কর্মের মূল ভাবনাই বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের শিশুদের নিয়ে। ছোট রাউতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে তিনি সাজিয়েছেন মনের মাধুরি মিশিয়ে। মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ থাকার জন্য উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠের স্থান দখল করে নিয়েছেন তার বিদ্যালয়টি। ২০১৭ সালে তিনি এই বিদ্যালয়ে যোগদান করেন, সেই থেকে সফলতার সাথে কর্মদক্ষতা দিয়ে কাজ করে ২০২২ সালে উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসাবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এই জীবন্ত কিংবদন্তি শিক্ষক ফেরদৌসী ম্যাডাম যার ধ্যান জ্ঞান পুরোটাই বিদ্যালয় ও তার শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে। পরিপাটি ভাবে সাজানো পরিস্কার পরিছন্ন স্কুলের খেলার মাঠটি দেখলেই বোঝাযায় কোথাও একটি পাতাও পড়ে থাকতে দেখবেন না। শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মন কেড়েছে বিদ্যালয়ের ছাদ বাগান। বাগানটি একটি নজর দেখতে প্রতিদিন মানুষের ভীড়জমে। এই কাজে উৎসাহ দিয়েছেন সহকারী শিক্ষকগণ। সরকারী ভাবে বরাদ্ধকৃত টাকা ছাড়াও নিজের অর্থ ব্যায়ে তিনি বিদ্যালয়টিকে সাজিয়েছেন মনের মতকরে। উপজেলায় ১৭৯টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বিদ্যালয় গুলোতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর শিক্ষা উপকরণ সহ বিদ্যালয় উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু এই অর্থ সঠিক ভাবে ব্যবহার করলে বিদ্যালয় গুলোকে শিশুদের শিক্ষার উপযোগী করে গড়ে তোলা যায় তার প্রমান দিলেন এই প্রধান শিক্ষক। তিনি এই অর্থ বিদ্যালয় ও শিশুদের জন্য ব্যয় করে শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিদ্যালয়টিকে উপযোগী করে তুলেছেন। সবচেয়ে বড় সফলতার বিষয় গত কয়েকদিন আগে ইউনিট লিডার নাজিরা আখতার ফেরদৌসী চৌধুরীর নের্তৃত্বে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী শিক্ষিকা ইলোরা জাহানের কন্যা মুসাফ্ফা কবির জাতীয় পর্যায়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ কাব অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত হয়। বিদ্যালয়টিতে ৩৩১ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। শিশু শ্রেনীসহ সব শ্রেনী গুলো রয়েছে ইতিহাসের কালের স্বাক্ষী হিসেবে সাজানো। বিভিন্ন কবি,সাহিত্যিক মুক্তি যোদ্ধাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে শ্রেনী কক্ষগুলো। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার নামে করা হয়েছে মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য ভিত্তিক মুক্তি যোদ্ধা গ্যালারী। সেখানে নতুন প্রজন্মকে জানার জন্য রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক শিশুদের জন্য লেখা নানা লেখকের বই, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা, খেলার উপকরণ। এছাড়া জাতীয় চার নেতা, বীর শ্রেষ্ঠসহ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক ছবি ও চার্ট দেয়ালে প্রদর্শন করা হয়েছে। অফিস কক্ষটিতে রয়েছে জাতীর শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তি ছবিসহ ফুলের সমারহো। শিশুদের লেখা দেয়ালিকায় মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনকের অবদান ও তার কর্ম জীবন ফুটিয়ে তুলেছে। শিশুদের জন্য একটি ফুলের বাগান। সব মিলিয়ে একটি পরিপাটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা দেখলে প্রান জুড়িয়ে যায়। বিদ্যালয়টির সামনে বারান্দায় বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ। স্কুলের ছাদে তিনি লাগিয়েছেন বিভিন্ন প্রজাতির ফল ও ফুলের গাছ, যা টিফিনের সময় সহকারী শিক্ষকসহ সকলে পরিচর্চা দিয়ে ফুলের সুবাসে ফুটিয়ে তুলেছে ছাদ বাগানটি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, আমরা এই বিদ্যালয় নিয়ে গর্ববোধকরি, এই বিদ্যালয়টি শিশুদের শিক্ষার জন্য একটি আদর্শ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষানুরাগীরা ফুল প্রেমী মানষেরা ভীড় জমায়। শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও এলাকা বাসীর সহযোগীতা থাকলে প্রত্যেকটা প্রাথমিক বিদ্যালয় এভাবে সাজিয়ে তোলা সম্ভব। এ বিদ্যালয়টি দেখে অন্যদের ও তাদের নিজস্ব উদ্যোগে নিজ বিদ্যালয়কে সরকারের নিয়ম মেনে সুন্দর করার চেষ্টা করলে প্রাথমিক শিক্ষার আরো মানবৃদ্ধি পাবে।