দেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে চিনি ও গুড়ের চাহিদা। আর এ বাড়তি চাহিদার তুলনায় চিনি ও গুড়ের উৎপাদন খুবই অপ্রতুল। বাড়তে থাকা চিনি ও গুড়ের চাহিদা মেটাতে সরকারি ভাবে আখ চাষে নেওয়া হয়েছে বিশেষ পরিকল্পনা। ফলে দেশের অন্যান্য এলাকার মতো সীতাকুন্ড ইকোপার্কের পাহাড় সংলগ্ন সমতল ভূমিতে রঙবিলাশ আখ চাষে বাড়ছে চাষিদের আগ্রহ। কৃষি প্রধান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে আখ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় আখ শব্দের উৎপত্তি ইক্ষু থেকে। আর আখ হলো বাঁশ ও ঘাসের জাতভাই। এটি পোয়াসি পরিবারের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। আখের রস চিনি ও গুড় তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। আখের উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট চাষিদের উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ‘সহ দিয়ে যাচ্ছে কারিগরি প্রশিক্ষণ। উপজেলার ইকোপার্ক, ফকিরহাট, মুরাদপুর, বাঁশবাড়িয়া, সৈয়দপুর, আলাকুলিপুর, টেরিয়াইল, বহরপুর ও বারৈয়াঢালা‘সহ উপজেলার সর্বত্র কম বেশি আখের চাষ হয়। সীতাকুন্ডের আঞ্চলিক ভাষায় অনেকে আখ’কে কুশ্যাল বলে থাকে। আখ চাষের উপযোগী বেলে দো-আঁশ অথবা পলি দো-আঁশ মাটি। বাণিজ্যিক ভাবে আখ চাষের সাফল্যে চাষিদের মাঝে জেগেছে ব্যাপক সাড়া। চাষ উপযোগী ভূমিগুলোর বাড়ছে ভৌগোলিক গুরুত্ব। ইকোপার্কের সফল আখ চাষিদের একজন ঢালীপাড়ার বাসিন্দা নুরুল আলম। তিনি জানান এবার সাড়ে ৬ শতক জমিতে আখ চাষ করেছি। ফলন মোটামোটি ভালো হয়েছে। বাজারে আখ বিক্রি শুরু করেছি। তিনি আরো জানান খুচরা বাজারে বড় সাইজের রঙবিলাশ আখ ৭০-৮০ টাকা, মাঝারি সাইজের আখ ৫০-৬০ টাকা ও ছোট সাইজের আখ ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারী বিক্রেতা ৫০ টাকা দরে ক্ষেত থেকে আখ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। মহাদেবপুরের চাষি রমজান আলী বলেন গত সপ্তাহে ১ শতক জমির আখ পাইকারী ভাবে বিক্রি করেছি। ক্ষেতের সমস্থ আখ ঠিকমতো বিক্রি করতে পারলে ভালো মুনাফা পাওয়ার আশাবাদী তিনি। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড দক্ষিণ মহাদেবপুর হাসান গোমস্তাপাড়ার বাসিন্দা ডা. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, সীতাকুন্ডে রঙবিলাশ আখচাষ অত্যান্ত লাভজনক হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাজারে ক্রেতাদের এ আখের প্রতি রয়েছে বিশেষ আগ্রহ। আবার ইকোপার্কের রঙবিলাশ আখ শুনলে বেড়ে যায় ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুল্লাহ জানান, পাহাড়ি পলি মাটিতে উর্বর ইকোপার্কের সমতল জমিগুলো আখ চাষে বেশ উপযোগী হয়ে উঠেছে।
আখ চাষের উপযোগী উর্বর জমিগুলো কয়েক দফা পরিদর্শন করা হয়েছে। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে ফসল বাঁচাতে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আখের উৎপাদন বৃদ্ধিতে স্থানীয় চাষিদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ‘সহ কারিগরি সহায়তা দেওয়া হয়েছে।