শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন

মুসল্লিদের প্রতিরোধের মুখে স্বৈরাচারী হাসিনার নিযুক্ত খতিব রুহুল আমিনের পলায়ন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

স্বৈরাচারী হাসিনার নিযুক্ত বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মো.রুহুল আমিন সহস্রাধিক ক্যাডার নিয়ে গতকাল শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদে জোরপূর্বক জুমার নামাজ পড়ার চেষ্টা করলে তুমুল হট্টোগোলের মাঝে সাধারণ মুসল্লিদের প্রতিরোধের মুখে তিনি নামাজ পড়ানোর সুযোগ না পেয়ে পালিয়ে গেছেন। হাসিনার দোসর মুফতি রুহুল আমিনের আনা মাদরাসার ছাত্রদের হামলায় বায়তুল মোকাররমের ৪/৫টি দরজার গ্লাস ভাঙচুর এবং ১০/১২জন মুসল্লি আহত হয়েছে। হাসিনার প্রেতাত্মা মুফতি রুহুল আমিন দীর্ঘ দিন পালিয়ে থেকে আজ গওহড়ডাঙ্গা থেকে ৫/৬টি বাস যোগে সহস্রাধিক লোকজন নিয়ে বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়াতে এলে সাধারণ মুসল্লিরা ক্ষীপ্ত হয়ে উঠেন। ঐতিহাসিক ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর পলাতক থাকা হাসিনার নিযুক্ত বায়তুল মোকাররমের খতিব রুহুল আমিন সহ¯্রাধিক মাদরাসার ছাত্র নিয়ে আজ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জোরপূর্বক জুমা নামাজ পড়াতে এলে মসজিদের ভেতরে চরম হট্টোগোল এবং মারামারির ঘটনা ঘটে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিযুক্ত মুহাদ্দিস মাওলানা আবু ছালেহ পাটওয়ারী মসজিদের মিম্বরে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ান শুরু করলে হাসিনাকে কওমি জননী স্বীকৃতিদাতা খতিব মুফতি রুহুল আমিন সহ¯্রাধিক লোকজন নিয়ে মসজিদের মিম্বরের কাছে গিয়ে বসেন। এসময়ে একজন মুসল্লি হাসিনার নিযুক্ত খতিব মুফতি রুহুল আমিনকে বয়ান করতে দেয়ার নির্দেশ দিলে হৈ চৈ শুরু হয়। খতিব রুহুল আমিনের লোকজন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিযুক্ত মুহাদ্দিস আবু ছালেহ পাটওয়ারীর হাত ধরে টেনে মিম্বর থেকে নামিয়ে দেয় এবং বলেন, নামুন হুজুরকে বয়ান করার সুযোগ দিন না হয় খারাপ হয়ে যাবে। এসময়ে সাধারণ মুসল্লিরা হাসিনার খবিব রুহুল আমিনকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া বলে শ্লোগান দিতে থাকে। খতিব রুহুল আমিন মিম্বরে বসে মুসল্লিদের বার বার শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে জুতার বক্স নিয়ে মারামারি হাতাহাতি ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে দরজার গ্লাস ভাঙচুর শুরু হয়। এতে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হাসিনার নিযুক্ত খতিব মুফতি রুহুল আমিন দলীয় লোকজনের প্রহরায় দ্রুত মসজিদ থেকে পালিয়ে যান। তার সাথে সাথে গওড়ডাঙ্গা থেকে আগত মাদরাসার ছাত্র শিক্ষক এবং আওয়ামী ক্যাডাররা মসজিদ থেকে নামাজ না পড়্ইে পালিয়ে যায়। পরে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে এলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিযুক্ত ইমাম মাওলানা আবু ছালেহ পাটওয়ারী জুমার নামাজ পড়ান। খতিব জটিলতায় অনেকটা থমথমে পরিস্থিতিতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে আজ জুমার নামাজ আদায় করতে হয়েছে মুসল্লিদের। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর পলাতক থাকা বায়তুল মোকাররমের খতিব রুহুল আমিন ফিরে আসার ঘটনায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়।
পলাতক খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন অনুসারীদের নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে এসে বর্তমানে নামাজ পড়ানোর দায়িত্বে নিযুক্ত মাওলানা আবু ছালেহ পাটওয়ারীর মাইক্রোফোনে হাত দেন। এ সময় সাধারণ মুসল্লিরা হাসিনার নিযুক্ত খতিব রুহুল আমিনের অনুসারীদের প্রতিরোধ করেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। এতে করে মসজিদের সাধারণ মুসল্লিরা বিচলিত হয়ে পড়েন। মসজিদের ভিতরে ভাঙচুর করা হয়। দরজা-জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।
খবর পেয়ে মসজিদে আসেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তা ছাড়া আগে থেকেই বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য অবস্থান করছিলেন। অনেকে ওই সময় মসজিদ থেকে বেরিয়ে পড়েন। পরে পরিবেশ কিছুটা ঠান্ডা হলে সোয়া একটার দিকে আবার সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করেন।
এরপর থমথমে পরিস্থিতিতে নামাজ শেষে সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ দেখা যায় মসজিদ থেকে শ্লোগান দিতে দিতে একদল মুসল্লি বের হন। তারা ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’ বলে শ্লোগান দিচ্ছিলেন। বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা খতিব রুহুল আমিনের সমর্থক দু’জন মাদরাসার ছাত্রকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। এ সময় পুলিশ তাদের মসজিদ এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ান। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন আকন্দ এক বিবৃতিতে বলেছেন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম খতিব মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমীন আজ জুম্মার নামাজের খুৎবার জন্য প্রস্তুত নিচ্ছিলেন। সাধারণ মুসল্লিদের দাবি তিনি আজ নামাজ পড়াবেন না। কাওমি জননী উপাধি ও নৌকা মার্কায় ভোট চাই ও হাসিনা ওয়াজেদ নিয়োগ দেয়া সাধারণ মানুষ তার পিছনে নামায আদায় করবে না। খতিবের হুজরা খানায় নামাজের আগে সিদ্ধান্ত হয় ছাত্র পাহাড়ায় তিনি সালাত আদায় করবেন। কিন্তু ইসলামী ফাউন্ডেশন নিয়োগ দেয়া ভারপ্রাপ্ত ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ আবু ছালেহ আহমদ পাটোয়ারী খুৎবায় চলা কালীন সময়ে তাকে ফিরিয়ে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে তিনি বয়ানে শুরু করেন মুফতি রুহুল আমিন। এমন সময় সাধারণ মুসল্লিদের প্রতিবাদের মুখে অবশেষে পলায়ন করে। আবু সালেহ পাটোয়ারী ইমামতিতে নামাজ আদায় করেন সাধারণ মুসল্লি। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এই ধরনের আওয়ামী লীগের লোকেরা ঢুকে মারামারি ভাঙচুর এবং হামলা করবে তা কারো কাম্য নয়। আমি হাসিনার নিযুক্ত খতিবের এই ধরনের হীনমন্যতা সংকীর্ণতা আলেম সমাজের কলঙ্ক তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com