ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম সাহেবের নেতৃত্বে বাউফল পাবলিক মাঠে বুধবার (৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত বিশাল গণসমাবেশটি জনসমুদ্রে রূপ নেয়। ছাত্র-জনতার গন বিপ্লবে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার দাবিতে এই গন সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন, জননেতা আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপাধ্যক্ষ, মাও. মুহা.সিরাজুল ইসলাম সভাপতি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাউফল উপজেলা। বাদ আসর প্রধান অতিথি হিসেবে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম তার বক্তব্যে বাউফল উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হাজারো মুসল্লির উদ্দেশ্যে বক্তব্যে বলেন, বার বার নেতা পরিবর্তন না করে নীতি ও আদর্শের পরিবর্তন করতে হবে। তা না হলে আমাদের বার বার রক্ত দিতে হবে। নেতা পরিবর্তনের মাধ্যমে কখনো শান্তি ও বৈষম্য আসতে পারে না।এই ভুখন্ড মুসলমানরা শাসন করেছে। কিন্তু কিছু মুনাফেকদের কারণে আমরা পরাজিত হয়েছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সে সময় দিল্লীর ষড়যন্ত্রে ৮০ হাজার মাদ্রাসা ধ্বংস করা হয়েছে। আলেমদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে। হাজার হাজার আলেম হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন বৃটিশরা যখন দিল্লী দখল করেছিল, তখন ওলী আওলিয়ারা আন্দোলন করে তাদের এই ভুখন্ড থেকে তাদের বিতাড়িত করেছিল। কিন্তু মুসলমানরা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান পায়নি। সমাবেশটি বিশাল এক মিলনমেলায় পরিণত করে। ইসলামী ঐক্যজোটের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ এতে অংশ নেন। মূলত, দেশের মানুষকে ইসলামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা, ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা এবং সমাজে শান্তি ও সাম্যের বাণী প্রচারের উদ্দেশ্যে এই আয়োজনটি করা হয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির চরমোনাই তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও সামাজিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে ইসলামের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান। সমাবেশে শায়খে চরমোনাই আরও বলেন, মানুষ যেন সঠিক ইসলামী শিক্ষা লাভ করে এবং সেই শিক্ষার আলোকে তাদের জীবন পরিচালনা করে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও তিনি বিশেষ গুরুত্ব দেন। পীর সাহেব তাঁর ভাষণে দেশে নৈতিক ও ধর্মীয় অবক্ষয় রোধে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজে যদি ইসলামের শিক্ষাকে অনুসরণ করা হয়, তবে দেশের নৈতিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব হবে। সমাবেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে, ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব, দরিদ্র মানুষের সাহায্য ও সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। পীর সাহেব বলেন, মুসলমানদের উচিত পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা এবং একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসা। এই গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসনও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়, যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ছিল বেশ উদ্দীপনা এবং অনেকেই এই আয়োজনের মাধ্যমে ধর্মীয় জ্ঞান এবং চেতনা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। সর্বশেষে তিনি হাত পাখার প্রচারণ ও করেন। সমগ্র আয়োজনটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে ইসলামী চেতনার আলো ছড়িয়েছে।