প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, শহীদ মিনার হচ্ছে আমাদের জাতীয় চেতনার প্রতীক। মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরবোজ্জল অবদানের মধ্যে দিয়েই আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। এবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে ষৈ¦রাচারমুক্ত নতুন বাংলাদেশ পেলাম। আমাদের এ অর্জনকে ধরে রাখতে হবে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) বেলা চারটায় সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি সংলগ্ন জায়গায় জেলা পরিষদের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত নতুন শহীদ মিনারের শুভ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। পরে হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলার উন্নয়ন নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায়ও প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। যিনি এ জেলার কৃতি সন্তান। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেন। সোমবার বেলা সাড়ে চারটায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)এডভোকেট মল্লিক মঈনউদ্দিন আহমদ সোহেল, জেলা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ তোফায়েল আহমদ খান,এনজিও ব্যক্তিত্ব জামিল চৌধুরী, জেলা বিএনপি নেতা নাদীর আহমদ, রেজাউল হক, উপদেষ্টার ক্লাসমেট ওয়াহিদ আহমদ, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ শেরগুল আমহদ, সিপিবি নেতা কমরেড চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সুনামগঞ্জের খবর সম্পাদক পংকজ কান্তি দে, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান পীর, পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদ নেতা একেএম আবু নাসার, মানবাধিকার সংগঠন অধিকার আহবায়ক কবি মুহাম্মদ আমিনুল হক, সাংবাদিক দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মেহেদী হাসান সাকিবসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল ও জেলা কালচারাল অফিসার আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী পাভেলের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় জেলার উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে সংক্ষিপ্ত ধারনা উপস্থাপন করেন সহকারী কমিশনার মহিবুল আকন। এর আগে সকালে দিরাই উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন হাওর-সংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত সুনামগঞ্জের এই কৃতি সন্তান। অনুষ্ঠানের পূর্বে শিল্পকলা একাডেমি সংলগ্ন নবনির্মিত শহীদ মিনার এর আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন তিনি। রবিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তিনি মতবিনিময় করেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সরকারের সফলতা নির্ভর করে জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থনের ওপর।
এজন্য যার যার জায়গা থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষকদের ১০তম গ্রেডের দাবি নিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম বাজেট বরাদ্দ হয়। আমাদের প্রাইমারি প্রধান শিক্ষকরা এখনো ১০ম গ্রেড পাননি। সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডেই রয়েছেন। তাই প্রাইমারি সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডের দাবি বাস্তবসম্মত নয়। তবে তাদের দাবি অযৌক্তিক নয়। আমাদের প্রথম টার্গেট হচ্ছে প্রাইমারি প্রধান শিক্ষকরা যাতে ১০তম গ্রেড পান। আমরা সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ তৈরি করছি। প্রাইমারি সহকারী শিক্ষকরা পদোন্নতি পাবেন সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে। ক্রমান্বয়ে তারা পদোন্নতি পেয়ে ১০তম গ্রেড পাবেন। নতুন বইয়ের ব্যাপারে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশে বিগত কয়েক বছর ধরে বই উৎসব করে বাচ্চাদের বই দিয়ে থাকে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে বই তৈরি, ছাপাতে কিছু দেরি হয়েছিল। বইগুলোতে কিছু কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল। যে পান্ডুলিপি তৈরি করা হয়েছিল তা কিছুটা পরিমার্জন করা হয়েছে। সে কারণে বিলম্ব হয়েছে। তবে দেরি হলেও আগামী বছর জানুয়ারিতেই বিনামূল্যে বই পাবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা।