বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক মাফরুজা সুলতানা বলেন,“জুলাই ও আগষ্ট মাসের আন্দোলনের মাধ্যমে ১৭ বছর পর স্বৈরাচার মুক্ত হয়ে দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। তাই সকলকে নানান ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যাদের জীবনের বিনিময়ে দেশ নতুন করে স্বাধীনতা পেয়েছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সবসময় সেই সকল শহীদ পরিবারের পাশে আছে এবং থাকবে।” তিনি সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পরিবারগুলোর খোঁজ খবর নেয়ার পর সাংবাদিক তিনি সাংবাদিকদের কাছে আরো বলেন,‘ বিএনপি শহীদ ও আহত পরিবারগুলোর পাশে আছে এবং থাকবে। তবে কোন একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে তাদের প্রয়োজন পুরোপুরি পূরণ করা সম্ভব নয়। আমি সরকারের কাছে জোর
দাবি জানাচ্ছি প্রত্যেক শহীদ ও আহতের পরিবারকে আত্মনির্ভরশীল করতে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। আশা করি সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য,ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ই আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ ই আগষ্ট শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে ক্ষমতা তুলে দেন বাংলাদেশের মানুষ। মূলত কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে আন্দোলন শুরু হলেও পরবর্তীতে তা গণঅভ্যুত্থানের রূপ নেয় যার ফলশ্রুতিতে ২০২৪ এর জুলাই আগস্টে দেড়সহস্রাধিক বিক্ষোভকারী শাহাদাত বরণ করেছেন। ৫ই আগষ্ট ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে ঢাকায় যারা নিহত হন তাদের মধ্যে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৯ জনসহ আহত রয়েছে অনেকে। নিহতরা হলেন সাচড়া ৩ নং ওয়ার্ডের মোঃ সিরাজুল হকের ছেলে মোঃ সুজন, লিজা বেগম, জাকির হোসেন, দেউলা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল হকের ছেলে মোঃ সোহেল, মোঃ ইয়াছিন, মোঃ জামাাল, কুতুবা ইউনিয়নের দীপ্তদে, টবগী ইউনিয়নের মোঃ নয়ন সহ বড় মানিকা ইউনিয়নের নাহিদুল ইসলাম।
বোরহানউদ্দিন উপজেলায় বৈষম্য বিরোদী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যদের সাথে একান্ত আলাপকালে জানা যায় যে, “শহীদদের পরিবারকে ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিমের সহধর্মিনী উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক মাফরুজা সুলতানা গত ২৭ আগষ্ট নিহত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং সার্বিক বিপদ আপদে তাদের পরিবারের পাশে থাকবেন বলে জানান।
এছাড়া ঢাকার আইনজীবী এবিএম ইব্রাহিম খলিল সাচড়ার নিহত সুজনের পরিবারকে পাকা ঘর নির্মাণের জন্য নগদ ৫ লক্ষ টাকা ও দেউলা ইউনিয়নের মোঃ সোহেল এর পরিবারকে নগদ ২ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। পরিবারগুলোর দাবী সরকার নিহত পরিবারকে মাসিক ভাতা প্রদানের মাধ্যমে তাদের পরিবারকে আর্র্থিকভাবে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এছাড়া বৈষম্য বিরোধী বিপ্লবের সময় আহতদের অনেকে অর্থাভাবে সুচিকিৎসা নিতে পারছেন না। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সাময়িক আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। তাই সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত শহীদ ও হতাহত পরিবারের পাশে দাঁড়ানো একান্ত জরুরী।
বোরহানউদ্দিন মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, “শহীদের অবদান আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। শহিদদের পরিবারের পাশে দেশের সরকার ও সাধারণ জনগণকে সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। শহীদদের অবদান দেশ ও জাতির কাছে নানান আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো, রায়হান-উজ্জামান বলেন, “ ইতিপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কিছু আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি জুলাই-আগষ্ট শহীদদের সম্মানে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। তাছাড়া জুলাই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিহত পরিবাররগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে তাদের তথ্য সরকারের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন পর্যায়ক্রমে সারা বাংলাদেশের সাথে বোরহানউদ্দিনর সকল শহীদ পরিবারের আর্থিক সহায়তার আওতায়যুক্ত হবেন।