রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ অপরাহ্ন

অনুর্ধ্ব ১৯ এশিয়া কাপ: ভারতকে বিধ্বস্ত করে শিরোপা জয় বাংলাদেশের

স্পোর্টস ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

সিংহাসন ধরে রাখলো খুদে বাঘেরা। হাতছাড়া করেনি এশিয়া কাপ শিরোপা। শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট নিজেদের শিরেই রেখে দিল তারা। ভারতকে হারিয়ে করেছে স্বপ্নপূরণ, আরো একবার লাল-সবুজের এই দেশ চ্যাম্পিয়ন।
গতকাল রোববার শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশের যুবারা। দ্বিতীয় দল হিসেবে টানা দ্বিতীয়বার অনুর্ধ্ব ১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা জিতলো তারা। আজিজুলদের জয় ৫৯ রানে।
অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ (রোববার) ভারতীয় যুবাদের মুখোমুখি হয় জুনিয়র টাইগাররা। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। গুটিয়ে যায় ৪৯ দশমিক ১ ওভারে ১৯৮ রানে। ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনের সামনে লক্ষ্যটাকে মামুলি মনে হচ্ছিল। সেই লক্ষ্যই অবশ্য একটা সময় পাহাড়সম হয়ে উঠে আসরের রেকর্ড চ্যাম্পিয়নদের সামনে। শেষ পর্যন্ত তারা গুটিয়ে যায় ৩৫ দশমিক ২ ওভারে ১৩৯ রানে।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। মাত্র ১ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন আয়ুশ মাত্রে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আরেক ওপেনার বৈভব সুরিয়াবংশিকে মাত্র ৯ রানেই থামান মারুফ মৃধা। ভারত তৃতীয় উইকেট হারায় দলীয় ৪৪ রানে। আন্দ্রে সিদ্ধার্থ ফেরেন ২০ রান করে। চতুর্থ উইকেটে ২৯ রানের জুটি গড়েন কার্তিকেয়া ও মোহাম্মদ আরমান। ৪৩ বলে ২১ রান করে ইমনের শিকার হয়ে ফেরেন কার্তিকেয়া। এরপর হঠাৎ করেই ব্যাটিং ধ্স হয় ভারতের। আর ভারতকে সেই বিপর্যয়ে পড়তে বাধ্য করেন ইমন। একই ওভারে নিখিল কুমারকেও (০) ফেরান তিনি। পরের ওভারে এসে হারভানশ পাঙ্গালিয়াকেও ফেরান এই পেসার। মাত্র ৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের ব্যাটিং লাইনের মেরুদ- ভেঙে দেন ইমন। ৮১ রানে ৬ উইকেট হারানো ভারত যখন ৯২ রানে পৌঁছায়, তখন আঘাত হানেন ফাহাদ। কিরান করমালেকে ফিরিয়ে সপ্তম উইকেট তুলে নেন তিনি। তবে বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে ছিলেন তখনো মোহাম্মদ আমান। ভারতীয় অধিনায়ক চেষ্টা করেন বিপর্যয় সামলে এগিয়ে যেতে। ২৪ রান যোগ করেন হার্দিক রাজকে নিয়ে ৮ম উইকেটে।
তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল এসে থামান আমানকে। ৬৫ বলে ২৬ রান করা এই ব্যাটারের স্ট্যাম্প ভেঙে দেন তিনি। আমান ফিরলে খানিকটা চেষ্টা করেন হার্দিকও (২৪)। তবে তাকেও থামতে হয় আজিজুলের শিকার হয়ে। এরপর চেতন শর্মাকে ফিরিয়ে জয় নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তিনি ও ইমন নেন তিনটি করে উইকেট। জোড়া উইকেট নেন আল ফাহাদ। তাতে আটবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত প্রথমবারের মতো পায় ফাইনালে হারের স্বাদ। এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় যুবারা। ৬ দশমিক ১ ওভারে মাত্র ১৭ রানে হারায় ছন্দে থাকা কালাম সিদ্দিকীকে। ১৬ বলে মাত্র ১ রানে আউট হন তিনি। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ইনিংস বড় হয়নি আসরের এখন পর্যন্ত সেরা ব্যাটার অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের। জাওয়াদ ২০ ও আজিজুল ফেরেন ১৬ রানে। ১৯ ওভারে ৬৬ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ দল। সেখান থেকে শিহাব জেমস ও রিজান হোসেন মিলে ধরেন দলের হাল। যুগলবন্দীতে যোগ করেন ৮০ বলে ৬২ রান। যখন মনে হচ্ছিলো হয়তো ভালো কিছু হতে যাচ্ছে, তখনই ভাঙে জুটি। শিহাব ফেরেন ৬৭ বলে ৪০ রানে।
দ্রুত দেবাশীষ সরকারকেও (১) হারায় দল। বড় ধাক্কা আসে ৩৮তম ওভারের শেষ বলে রিজান ফিরলে। ৬৫ বলে ৪৭ রান করেন তিনি। ৪১ ও ৪২তম ওভারে শেষ দুই বলে ফেরেন রাতুল (৪) ও ফাহাদ (১)। স্কোর ১৬৭/৮। সেখান থেকে দুই শ’র কাছাকাছি পৌঁছায় ফয়সালের সৌজন্যে। একপ্রান্ত আগলে ৪৯ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। ১৯ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন মারুফ। হার্দিক রাজ, চেতন শর্মা ও গোহ নেন জোড়া উইকেট। এর আগে ২০২৩ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মত শিরোপা জিতেছিলো বাংলাদেশ। তবে ২০১৯ সালের আসরে ফাইনালে উঠলেও ভারতের কাছে ৫ রানে হেরেছিলো বাংলাদেশ। এবার ২০১৯ সালে ফাইনালে হারের বদলা নেওয়ার পালা হাকিম-ইমনদের।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com