শীতকালীন বিভিন্ন সবজির মধ্যে ফুলকপির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এই সবজি খেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। স্বাস্থ্যকর এই সবজি বিভিন্ন রোগের দাওয়াই হিসেবে কাজ করে। ওজন কমানো থেকে শুরু করে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যানসারসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে।
ইউএসডিএ’র তথ্যমতে, প্রায় ১০৭ গ্রাম ওজনের ১ কাপ কাটা কাঁচা ফুলকপিতে প্রায় ২৭ ক্যালোরি, ২ গ্রাম প্রোটিন, ৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ০.৩ গ্রাম ফ্যাট থাকে। এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি ৬, পটাসিয়াম, কোলিন ও ফোলেট সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনও খনিজ আছে।
উপকারিতা সত্ত্বেও ফুলকপি শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কারণ কারও কারও ক্ষেত্রে এই সবজি খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। তাই যারা নিন্মোক্ত সমস্যায় ভুগছেন, তারা অবশ্যই ফুলকপি খাওয়ার আগে যারা চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন-
গ্যাস্ট্রিক
ফুলকপি খাওয়ার পর অনেকেরই গন্ধযুক্ত ঢেঁকুর ওঠে। ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ডিসঅর্ডার বলছে, শুধু ফুলকপি নয় মটরশুঁটি, গোটা শস্য, বাঁধাকপি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, ব্রোকলি, অ্যাসপারাগাসসহ বিভিন্ন শাকসবজি খাওয়ার ফলে রাফিনোজ গ্যাস হতে পারে। তাই অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বা আলসারে যারা ভুগছেন তারা অবশ্যই এই সবজি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
থাইরয়েড ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়
২০১৫ সালে ‘পুষ্টি ও ক্যানসারে’ প্রকাশিত একটি মেটা-বিশ্লেষণের তথ্য অনুসারে, ক্রুসিফেরাসযুক্ত শাক-সবজি অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে থাইরয়েড ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় আরও জানানো হয়, ক্রুসিফেরাস সবজি ও আয়োডিনের প্রাপ্যতার উপর থাইরয়েড ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়ে। যারা এরই মধ্যে থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন, তাদেরও উচিত এই সবজি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
হজমের সমস্যা
ক্রুসিফেরাস সবজি হজম করা কঠিন, বিশেষ করে যখন আধা সেদ্ধ বা অবস্থায় কাঁচা খাওয়া হয়। গর্ভাবস্থায় ও বুকের দুধ খাওয়ান যেসব নারীরা, তারাও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ফুলকপি খাওয়া উচিত নয়। কারণ এ সবজি কিছু কিছু ওষুধে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
ওষুধের সঙ্গে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটায়
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মতে, ভিটামিন কে রক্ত পাতলা করার ওষুধের সঙ্গে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। তাই আপনি যদি রক্ত পাতলা করা ওষুধ ব্যবহার করেন, তাহলে ফুলকপি খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অ্যালার্জি বাড়ে
ফুলকপি খেলে অনেকেরই অ্যালার্জি হয়। এটিও ফুলকপির একটি সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। ফুলকপিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রোটিনযুক্ত সবজি ও ফলে অনেকের অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। মায়োক্লিনিকের তথ্য অনুসারে, কিছু শাক-সবজি ও ফলে অ্যালার্জি-সৃষ্টিকারী প্রোটিনই মূলত এ ধরনের অ্যালার্জির জন্য দায়ী।
দিনে কতটুকু ফুলকপি খাওয়া নিরাপদ?
নিয়ম অনুযায়ী ও নির্দিষ্ট পরিমাণে খাওয়া হলে ফুলকপি স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে অনেক উপকারী। সপ্তাহে একদিন বা দু’দিন অল্প পরিমাণে এটি খেতে পারেন। ফুলকপি বিভিন্ন উপায়ে খেতে পারেন। তবে আপনার যদি হজমের সমস্যা থাকে তাহলে আধা সেদ্ধ বা কাঁচা ফুলকপি খাবেন না। সূত্র: লাইভস্ট্রং/টাইমস অব ইন্ডিয়া/ইট দিস, নট দ্যাট