বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
পাঁচবিবি পৌরসভার প্রধান ড্রেনটি দীর্ঘ ২৫ বছরেও সংস্কার হয়নি: দুর্ভোগে এলাকাবাসী বর্ণাঢ্য আয়োজনে উলিপুর প্রেসক্লাবের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত জগন্নাথপুর থানার ওসি রুহুল আমীন জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত চকরিয়ায় মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধে সড়ক পুলিশের মাইকিং কালীগঞ্জ পৌরসভায় টিসিবি-র পণ্য বিতরণে অব্যবস্থাপনা এবং ব্যাপক অনিয়ম রূপগঞ্জে টায়ারস কারখানায় আগুনে ১৮২জন নিখোঁজ, স্বজনদের থানায় অবস্থান চরফ্যাসনের চরাঞ্চলে মহিষ পালনে সংকট ও সম্ভাবনা চকরিয়ার বদরখালীতে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আটক ৮ পটুয়াখালীতে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা পিরোজপুরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ

সুস্থ জীবনে ফেরার আকুতি আহত জাকারিয়ার

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৫

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার ধোপাখালি ইউনিয়নের মেছোখালি গ্রামের মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের দ্বিতীয় পুত্র মোহাম্মদ জাকারিয়া। এস এস সি পাস করে কাজের জন্যে তিন বছর আগে ছুটে আসেন রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীচরের বড় গ্রামে। কিছুদিন পর একটি বোরখা কারখানায় ম্যানেজার পদে চাকরি পান। বেতন পেতেন সামান্য। তা দিয়েই কোনরকম চলে যাচ্ছিল দিন। কিন্তু দেশে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে যখন রাস্তায় মানুষ নেমে আসে, বসে থাকেননি জাকারিয়াও। তিনি চাকরির কথা না ভেবেই ১৫ জুলাই থেকে নিয়মিত মিছিলে অংশ নিতে থাকেন।
সেদিন ছিল শুক্রবার, ১৯ জুলাই। জুম্মার নামাজ আদায় করে জাকারিয়া নেমে পড়েন গগনবিদারী শ্লোগানে মুখরিত বিশাল মিছিলে। ঢাকা নিউমার্কেট নীলক্ষেতের সামনে মিছিলটি এলে খুনি হাসিনার পেটোয়া গুন্ডা পুলিশ বাহিনী নির্বিচার গুলি শুরু করে। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে জাকারিয়ার ডান পায়ের গোড়ালিতে গুলি লাগে। রক্তাক্ত আর আহত অবস্থায় কাতরাতে থাকেন তিনি। এ সময় মিছিলে অংশ নেয়া অন্য সহকর্মীরা তাকে দ্রুতই নিয়ে যান ঢাকা ইবনে সিনা হাসপাতালে। সমস্যা হওয়ায় সেখান থেকে পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিছুদিন চিকিৎসা শেষে ফিরে আসেন গ্রামে।
এখন তার কর্মহীন জীবন। হাঁটতে পারেন না। চলতে হয় হুইল চেয়ারে। স্বাভাবিক কোন কাজকর্মই করতে পারছেন না। আটকে আছেন বেকারত্বের বেড়াজালে। কেউ কোন খোঁজ খবর নেয়নি। কোন প্রকার আর্থিক সাহায্য ও সহযোগিতাও পাননি। ধার দেনা হয়েছে অনেক। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছেন না। জাকারিয়া হতাশা ভরা কন্ঠে জানান, তিনি দ্রুতই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান। কিন্তু কিভাবে তা সম্ভব জানেন না। সরকার যদি এগিয়ে আসতো, তাহলেই হয়তো তিনি সুস্থ জীবনে ফিরতে পারতেন। এ সময়ে তিনি সরকারি সহায়তার জন্যে আকুল আবেদন জানান।
জাকারিয়ার মা হেলেনা বেগম (৪৬) গৃহিণী। তিনি বাসস প্রতিনিধিকে জানান, তার ছেলে প্রতিবাদী চরিত্রের। প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতো। আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় পেট চালাতে ঢাকায় পাড়ি জমায় চাকরির জন্য। কলেজে পড়াশুনার ইচ্ছে ছিল ছেলের। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক অসচ্ছলতর কারণে তা সম্ভব হয়নি। অভাব তাদের কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আহত জাকারিয়ার মা হেলেনা আক্ষেপ করে বলেন, ‘সরকার সহযোগিতার হাত বাড়াচ্ছে না। হায়রে পোড়া কপাল আমাদের!’
জাকারিয়ার পিতা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন(৫৩)। পেশায় ভ্যানচালক। ছেলের পঙ্গুতের ভারে তিনিও যেন অসহায় হয়ে পড়েছেন। ছেলের চিকিৎসার জন্যে তিনিও সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানান।
জাকারিয়ারা চার ভাই বোন। বড়ভাই মো: আব্দুর রহমান (২৭)। তৃতীয় ভাই মো: ওমর (২১)। তারাই বর্তমানে জাকারিয়ার দেখভাল করছেন। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহ তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। একমাত্র কনিষ্ঠ বোন ফাতেমা খাতুন (১৫)। মাধবকাঠি আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে পড়েন।
আহত জাকারিয়ার ভাই মো: আব্দুর রহমানের জিজ্ঞাসা, তাদের ভাই কি সরকারি ভাবে চিকিৎসা সহায়তা পাবে না? দেশ যদি দ্বিতীয় বার স্বাধীনতা লাভ করে তাহলে তার ভাই মোহাম্মদ জাকারিয়াও তো তার একজন গর্বিত অংশীদার। তাহলে তার চিকিৎসার টাকা পেতে সমস্যা কোথায়? আহত ও পঙ্গু জাকারিয়ার সহকর্মী আত্মীয় স্বজন বন্ধুদের দাবি, অবিলম্বে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। জাকারিয়া পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com