নিজবাড়ি থেকে অপহরণের দশ দিনেও সন্ধান মেলেনি জামালপুরের কলেজ ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া তানজিয়া(১৫)। অপহরণকারীরা তাকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা এবং গুম করে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বজনরা। পুলিশের রহস্যজনক নিরবতার কারণে মামলার এজাহারভুক্ত ৩ আসামীর জামিন ও প্রধান আসামীসহ অন্যান্য আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় অভিযোগ করেন মামলা বাদী। তবে পুলিশ বলছে আসামীরা পালাতক থাকায় অপহৃতাকে উদ্ধার ও মুল আসামী গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। অপহৃতা তানজিনার বাবা এখলাছুর রহমান এই প্রতিবেদককে জানান- জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের জোয়ানেরপাড়া গ্রামে বসবাস করেন তারা। স্থানীয় দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী তানজিনা। তানজিনার সাথে জোরপূর্বক প্রেমের সম্পর্ক গড়তে দীর্ঘ দিন ধরে তাকে উত্যক্ত করে আসছিলেন একই ইউনিয়নের গান্দাইল এলাকার সফির উদ্দিনের বখাটে ছেলে সাঈদ হাসান সিয়াম(২০)। তানজিয়া তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে রাজি না হওয়ায় আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে সিয়াম। তানজিয়া বিয়ের প্রস্তাব না মানলে তার পরিবারের স্বজনদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিলেন সিয়াম। বিষয়টি জানাজানি হলে স্বজন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বখাটে সিয়ামকে উত্যক্ত না করার জন্য তার পরিবারকে সতর্কও করেছিলেন। কিন্তু বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হাওয়ায় গত ৩ জানুয়ারি সকালে সিয়াম ও তার লোকজনরা নিজ বাড়ি থেকে তানজিয়াকে জোরপূর্বক অপহরণ করে সিএনজিতে উঠিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় অপহরণকারী সিয়াম ও তার মা জেসমিন আক্তারসহ ছয়জনকে আসামি করে গত ৫ জানুয়ারি জামালপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন অপহৃতা তানজিয়ার বাবা এখলাছুর রহমান তালুকদার। কিন্তু অপহরণের দশ দিনেও পুলিশ অপহৃতা তানজিয়াকে উদ্ধার করতে পারেনি। তানজিয়ার বাবার দায়ের করা মামলার ছয়জন আসামির মধ্যে তিনজন আসামি কৌশলে আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন। কিন্তু মামলাটির প্রধান আসামি অপহরণকারী সাঈদ হাসান সিয়ামসহ অন্যান্য আসামিদের এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে অপহরণের দশ দিনেও কলেজছাত্রী তানজিয়ার কোন সন্ধান না পেয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তার স্বজনরা। অপহরণকারীরা অপ্রাপ্ত বয়স্ক তানজিয়াকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ গুম করে থাকতে পারে বলেও শঙ্কায় রয়েছেন তানজিয়ার বাবা এখলাছুর রহমান তালুকদার। তানজিনার বাবার অভিযোগ, অপহরণের দশ দিনেও পুলিশ তার মেয়ে তানজিয়াকে উদ্ধার করতে পারেনি। পুলিশের রহস্যজনক নিরবতার কারণে অপহরণ মামলার এজাহারভুক্ত তিনজন আসামি আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় এসে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তার মেয়েকে উদ্ধার করতে না পারলে পাশবিক নির্যাতন শেষে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলারও আশঙ্কা করছেন তিনি। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা স্থানীয় নারায়ণপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল আলিম এই প্রতিবেদককে বলেন, মামলাটির তিনজন আসামি আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। মামলাটির প্রধান আসামি সিয়ামসহ তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার ও অপহৃতা তানজিয়াকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।