নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন থানার উদ্বোধন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। গত মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এই নতুন থানার উদ্বোধন করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা এতদিন ভুল বুঝেছিল যে, এখানে তাদের নানা ধরনের অসুবিধা হবে। কিন্তু এখন ভাসানচরের সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা দেখে ভবিষ্যতে রোহিঙ্গারা ভাসানচরে দলে দলে আসবে। তিনি বলেন, গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকরা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচরে যাওয়ার ব্যাপারে প্রথমে অনীহা দেখালেও এখন তাদের সেই অনীহা নেই। ভাসানচর ও আশপাশের এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নতুন থানা করা হয়েছে।
এসময় নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন, নোয়াখালী-৬ আসনের সাংসদ আয়েশা ফেরদাউস, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন বিপিএম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খানসহ এনডিসি, পিএসসি, বিএন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গা স্থানান্তরের পরিকল্পনায় তাদের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে এই থানা অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। ২০১৯ সালে ২১ অক্টোবর প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) এর ১১৬তম সভায় এই থানা স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ভাসানচর থানার জন্য ২৪টি পদ অনুমোদন করে। ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদগুলো মঞ্জুরি দেয়। হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা নিয়ে গঠিত ভাসানচর থানাটি জেলার দশম থানা। ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩ এ বসবাসকারী মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাসহ অন্যান্যদের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিতের জন্য থানটি করা হয়েছে। এই থানায় একজন পুলিশ পরিদর্শক (অফিসার ইনচার্জ), দুজন উপ-পরিদর্শক (এসআই), চারজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও ১৭ জন কনস্টেবল থাকবেন। উদ্বোধন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথিরা গাছের চারা রোপণ করেন।