গাইবান্ধায় ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাবেক ইউপি সদস্য লাল মিয়া সরকারের খুনিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। সেই সাথে আগামী রবিবারের (৭ মার্চ) মধ্যে এই হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার না হলে পরদিন সোমবার অর্ধদিবস হরতালের ডাক দেয়া হয় বিক্ষোভ থেকে। সোমবার দুপুরে ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের সামনে এক মানববন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সদরের প্রধান প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে পরিষদ গেটে রাস্তায় বসে আধা ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। এ সময় সড়কের দুই পাশে শতশত যানচলাচল আটকা পড়ে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ বলেন, ‘দিনের আলোয় লাল মিয়াকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও ছুরি মেরে হত্যা করেছে খুনিরা। এই চিহ্নিত খুনিদের আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ-প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় এসব খুনিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী রবিবারের (৭ মার্চ) মধ্যে এই হত্যা মামলার চিহ্নিত মূল হোতাদের গ্রেফতার করা না হলে পরদিন সোমবার অর্ধদিবস হরতাল পালন করবে ফুলছড়িবাসী। এ সময় নিহত লাল মিয়ার বেয়াই ফজলুপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন সরকার বলেন, ‘হত্যাকা-ের পর থেকে নিহত বিয়াইয়ের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগতেছে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেফতার করা না হলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুনিদের ধরে আনার হুমকি দেন তিনি।’ সাবেক ইউপি সদস্য লাল মিয়া হত্যা কান্ডের আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে ফুলছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি কাওসার আলী সাথে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পুলিশ সিআইডি গাইবান্ধা মামলাটি তদন্ত করছেন এবং ফুলছড়ি থানা পুলিশ তাদেরকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছেন। বিক্ষোভ মিছিলে আরও বক্তব্য রাখেন, ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রকি, বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলাল হোসেন ইউসুফ, জেলা ওয়াকার্স পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মাসুদুর রহমান মাসুদ ও নিহতের ছেলে মুরশিদ আলী প্রমূখ। এর আগে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে উপজেলা সদরে যাওয়ার পথে উড়িয়ার সাদেকখাঁ বাজার এলাকায় প্রতিপক্ষ এনায়েত হোসেন ও তার লোকজন লাল মিয়ার ওপর হামলা চালান। তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে বিকেলে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় পরদিন বুধবার ফুলছড়ি উপজেলা সদরে নিহত লাল মিয়ার লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। এদিন নিহতের ছেলে মুরশিদ আলী সন্ধ্যায় একটি হত্যা মামলা করেন। কিন্তু মামলা হওয়ার তিন সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।