গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের থানায় নির্মম নির্যাতন করে মিথ্যা ও বানোয়াট স্বীকারোক্তি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক নুরুল হক নুর। গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ছাত্র, যুব, শ্রমিক অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, হয়রানির প্রতিবাদ ও রোববার নুরকে গুমের চেষ্টাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর পল্টনস্থ জামান টাওয়ারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নুরুল হক নুর বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, নরেন্দ্র মোদি বিরোধী আন্দোলনে সহিংসতায় সরকারি দলের লোকজনসহ দুর্বৃত্তরা জড়িত থাকলেও সরকার ভিন্নমত ও বিরোধীদের দমনে মিথ্যা মামলা ও ভিত্তিহীন অভিযোগে অসংখ্য মানুষকে গ্রেপ্তার করছে। যেখানে বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদেরও ৫২ জনকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে থানায় অমানবিক নির্যাতন করে মিথ্যা ও বানোয়াট স্বীকারোক্তি নেয়া হচ্ছে। যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী। আমি গ্রেপ্তারকৃতদের অতিদ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জোরালো দাবি জানাই।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মতো বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদযাপন অনুষ্ঠান সরকার দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণকে সম্পৃক্ত না করে সংকীর্ণ দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পালন করেছে।
এমনকি মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করলেও তাতে সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ বিনা উস্কানিতে দফায় দফায় সশস্ত্র হমলা ও গুলি চালায়। যাতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৭৪২ জন আহত, ১৯ জন নিহত ও ১৮২ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে রাষ্ট্র কর্তৃক এমন পক্ষপাতমূলক ও জঘণ্য কাজ স্পষ্টতই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী।
ঢাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, গতকাল (রোববার) গুলশান থেকে বাসায় ফেরার পথে সাদা পোষাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে একদল লোক উত্তর বাড্ডা এলাকা থেকে আমাকে অপহরণের চেষ্টা করে। রাস্তায় যানজট থাকায় গাড়ি চলার মতো অবস্থা ছিলো না, আমি গাড়ির দরজা ধাক্কা দিয়ে বাইরে বের হয়ে চিৎকার করে লোকজন জড়ো করলে তারা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পোষাক পরিহিত কিছু পুলিশের লোক এসে ছাত্র অধিকার পরিষদ যুগ্ম আহ্বায়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ক্রীড়া সম্পাদক আরেফিন ফরহাদ ও পরিচিত ছোটভাই শিপনকে গ্রেপ্তার করে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এর আগে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শাহবাগ থানায় জিডি করেও কোন প্রতিকার পাইনি। বরং বিভিন্ন সময় হামলা ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছি।