জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, বিডি নিউজের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী এবং দুই প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে চাল ও ত্রাণ চুরির খবর প্রকাশের জেরে মামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে)।
একইসঙ্গে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এ মামলার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দ্রুত প্রত্যাহারের আহ্বানও জানিয়েছে সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠনটি। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ব্রাসেলসভিত্তিক আইএফজে এ আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) এক বিবৃতি উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএমএসএফ বলেছে, দুই সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা এ পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানাই এবং মিথ্যা মামলাটি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএফজে’র পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুই সম্পাদক এবং দুজন প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মামলা কেলেঙ্কারির সংবাদ প্রচার থেকে গণমাধ্যমকে বাধা দেয়ার অপচেষ্টা। জনবান্ধব সাংবাদিকতার স্বার্থে অবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে আইএফজে।
এর আগে এ মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেয় দেশের সম্পাদকদের সংগঠন ‘সম্পাদক পরিষদ’, ‘এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ’সহ বিভিন্ন সংগঠন।
গত ১৭ এপ্রিল রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি থানায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোমিনুল ইসলাম ভাসানী মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় শাওন আমিন ও রহিম শুভ নামে স্থানীয় দুই সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী মোমিনুল ইসলাম ভাসানীর অভিযোগ, কয়েক দিন আগে তার এলাকা থেকে ১০ টাকা কেজি দরের ৬৮ বস্তা চাল উদ্ধার হয়। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিখিল চন্দ্র বর্মণ সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে ৯ এপ্রিল একটি মামলা করেন। কিন্তু মামলার একদিন আগে অর্থাৎ ৮ এপ্রিল সকালে শাওন আমিন ও রহিম শুভ ফেসবুকে তাকে ‘চাউল চোর’ আখ্যায়িত করে পোস্ট দেন। একদিন পর জাগো নিউজ ও বিডি নিউজে তাকে এবং তার ভাই ৪ নম্বর বড় পলাশবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম আমিনকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এতে তার ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দিচ্ছে সরকার। কিন্তু এ কর্মসূচিতে প্রতিনিয়ত অনিয়মের খবর আসছে। কিছু জনপ্রতিনিধি এবং খোলাবাজারে বিক্রয়কারী (ওএমএস) ডিলার চাল আত্মসাৎ করছেন। চাল আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে ইতোমধ্যে আটকও করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে কয়েক হাজার বস্তা চাল উদ্ধারও করা হয়েছে।
এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র