ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এজেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটররা টাকা লেনদেনের নীতিমালা ও নির্দেশনা যথাযথ পালন না করার কারণে এ কার্যক্রমকে ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধীচক্র দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে চাঁদাবাজির ঘটনা সংঘটিত করছে। শুধু তাই নয় অনেক সময় অপরাধীচক্র প্রতারণার মাধ্যমে বিকাশসহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতি ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ডিএমপি জানায়, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় ভাবা এখন সময়ের দাবি। নিঃসন্দেহে অপিরিচিত কারো সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিংর মাধ্যমে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্কতা গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে এ ব্যাংকিং ব্যবস্থা পরিচালনার দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাদেরও উচিত এ ব্যবস্থাতে যেন কোনো দুর্বলতা বা নিরাপত্তার ঘাটতি না থাকে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
এ বিষয়ে ডিএমপি কিছু পরামর্শ দিয়েছে- ১. এজেন্ট/ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করে এজেন্টদের নাম ও ঠিকানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা। ২. ঢাকা মহানগরী এলাকায় যে সকল বিকাশ/ইউ ক্যাশ/মোবি ক্যাশসহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট বা ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছে সে সকল প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার (রাত্রিকালীন ছবি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন) ব্যবস্থা করা। ৩. স্থায়ী কোনো দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকলে এজেন্ট নিয়োগ না করা এবং ব্যাঙের ছাতার মতো রাস্তাঘাটে, ফুটপাতে, গাছের নিচে অস্থায়ীভাবে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে যত্রতত্র মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা না করা। ৪. এজেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করে এজেন্টদের নাম ও ঠিকানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা এবং আবেদনকারীদের নাম, ঠিকানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি সংক্রান্তে তথ্যসমূহ স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক ভেটিং করানো। ৫. মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকের হিসাব খোলার আবেদনের ক্ষেত্রে কহড়ি ুড়ঁৎ ঈঁংঃড়সবৎং (কণঈ) ঋড়ৎস যথাযথভাবে পূরণ বাধ্যতামূলক করা ও সরবরাহকৃত তথ্যসমূহ ব্যাংক কর্তৃক সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন না করে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের অনুমোদন প্রদান না করা।
৬. ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেন্টার থেকে যারা ক্যাশ আউট করবে (টাকা উঠাবে) তাদের ছবি, নাম-ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র, ফোন নম্বর গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় তথ্য রেজিস্টারে সংরক্ষণের ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে সকল এজেন্টদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান ও সচেতনতমূলক নির্দেশনা প্রদান করা।
এ ছাড়াও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ, ইউ ক্যাশ, মোবি ক্যাশ, ডিবিবিএল ক্যাশ ইত্যাদি) মাধ্যমে লেনদেনকৃত নগদ টাকা পরিবহনকারীরা সন্ত্রাসীদের সফট টার্গেটে পরিণত হয়েছে এবং টাকা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বহন করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ ধরণের দুর্ঘটনা ও ঝুঁকি এড়াতে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার আর্মড ভেহিকেল ও নিরাপত্তা রক্ষীদের প্রহরায় টাকা পরিবহনের (মোবাইল ব্যাংকিং) ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ডিএমপির ‘মানি এস্কর্ট’ সেবা নিতেও পরামর্শ দিয়েছে ডিএমপি।