সাভারের বেশিরভাগ পোশাক কারখানা রোববার (২৬ এপ্রিল) খুলে দেওয়া হয়েছে। অনেক শ্রমিক বেতনের আশায় ফিরে এসেছেন আগেই। আর যারা গ্রামে ছিলেন, তারাও চাকরি বাঁচানোর জন্য কষ্ট হলেও ফিরেছেন রাতেই। শত দুর্ভোগ উপেক্ষা করে খণ্ডপথ পায়ে হেঁটে কিংবা গাড়িতে কিছুটা পথ পাড়ি দিয়ে অনেকেই যোগ দিয়েছেন কর্মস্থলে।
রোববার সকালে সাভারের বাড়ইপাড়া, জিরানীবাজার, বাইপাইল, নবীনগর, কাঠগড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ কারখানাই খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড দিয়ে হেঁটে হেঁটে কারখানায় যাচ্ছিলেন পোশাক শ্রমিক শিউলি। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গতকাল সুপারভাইজার ফোন করে বলেছে, আজ থেকে তাদের কারখানা খুলে দেবে। কারখানায় উপস্থিত না থাকলে চাকরি থাকবে না। তাই ফোন পাওয়া মাত্র বাড়ি থেকে বের হয়েছি। খুব কষ্ট করে এসেছি। গাড়ি নাই রাস্তায়, আমি মেয়ে মানুষ, কখনও ট্রাকে, কখনও পিকআপ ভ্যানে, অটোরিকশায় করে আবার কখনো পায়ে হেঁটে প্রায় ১৬ ঘণ্টায় সাভারে এসেছি। আমার ওপর পরিবারের চারজন নির্ভরশীল। চাকরি না থাকলে তারা না খেয়ে কষ্ট পাবে। তাই শত কষ্ট উপেক্ষা করে আসলাম কাজে যোগ দেওয়ার জন্য।
ডিইপিজেড বাসস্ট্যান্ড দিয়ে কারখানায় যাচ্ছেন মরিয়ম নামের এক পোশাক শ্রমিক। তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে বেশি ভাড়া দিয়ে রাতেই বাসায় ফিরেছি। আজ থেকে কারখানা খুলে দিয়েছে তাই আসা। না এলে তো বেতন ও চাকরি হারানোর হুমকি দেয় সুপারভাইজার। কারখানা কতৃপক্ষ বলেছে, সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তারা নিয়েছে। তারা যদি নিরাপত্তা না নেয়, তবুও আমাদের কাজ করেই খেতে হবে। আমরা মারা গেলেও পরিবারকে কষ্ট দিতে পারব না। আল্লাহর ওপর ভরসা করে মাস্ক পড়ে কারখানায় যাচ্ছি। হায়াত থাকলে কিচ্ছু হবে না ইন শা আল্লাহ।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সারোয়ার হোসেন বলেন, আজ এ শিল্পাঞ্চলের অর্ধেকের বেশি কারখানা খুলে দিয়েছে। শ্রমিকরাও কাজে যোগ দিয়েছেন। তারা কে কোন এরিয়া থেকে এসেছেন, করোনা আক্রান্ত এলাকা কি না, তা আমরা জানি না। বিভিন্ন জেলার শ্রমিকরা এসেছেন। তারা কাজও করবেন একই ছাদের নিচে। ফলে করোনা ঝুঁকি বাড়ল শ্রমিকদের। দেশের স্বার্থে কারখানা খোলা রাখতে হবে। তবে বিভিন্ন জেলা থেকে ফেরা শ্রমিকরা ১৪ দিন ঘরে সঙ্গরোধে (হোম কোয়ারেন্টাইনে) থাকার পর কাজে যোগ দিলে ভালো হতো।
এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র