সাম্প্রতিক সব নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিএনপি নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপরে দায় চাপাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নয়, ভেঙে পড়েছে বিএনপি। হারতে হারতে দলটি এখন নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহই হারিয়ে ফেলছে।’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে’ বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন। গতকাল সোমবার (২৪ মে) সকালে তার বাসভবনে নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের ওপর দায় চাপাচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং এই প্রতিষ্ঠান এখন স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিএনপি নির্বাচনে আসে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে। জনগণ বিএনপির এসব বুঝতে পেরেছে বলেই তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’

বিএনপির ভোট কারচুপির যে অতীত ইতিহাস, সেই রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারাই এখন নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে?’
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিনের বিষয়টিকে ফরমায়েশি রায় বলে বিএনপি মহাসচিবের স্বভাবসুলভ নেতিবাচক বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের জানতে চান, ‘কে ফরমায়েশ দিয়েছে?, কোথা থেকে দিয়েছে?’ তিনি মির্জা ফখরুলের কাছে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে কিনা তাও জানতে চান। এ ধরনের কাল্পনিক অভিযোগ শুধু বিএনপিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগকেও বিএনপি হেয় করছে বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, বিএনপির অপরাজনীতি আর মিথ্যাচার ছিল এতদিন সরকারের বিরুদ্ধে, এখন আদালতের বিরুদ্ধে তারা বক্তব্য দিচ্ছে— যা প্রকারান্তরে আদালত অবমাননার শামিল।
কাদের বলেন, ‘পাসপোর্ট একান্তই একটি ট্রাভেল ডকুমেন্ট এবং আইডেন্টিটি, অন্য কিছু নয়, এটি ফরেন পলিসি বা ভূ-রাজনৈতিক বই নয়। পাসপোর্টের সঙ্গে বিশ্ব রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই, বিশ্বব্যাপী এখন ই-পাসপোর্ট সমাদৃত।’ পাসপোর্ট এবং বৈদেশিক সম্পর্ক নিয়ে মির্জা ফখরুল হঠাৎ এরূপ কাল্পনিক মনগড়া অভিযোগ কেন করছেন, সেটা বোধগম্য নয় জানিয়ে মির্জা ফখরুলের এই মন্তব্যের পেছনে কোনও দুরভীসন্ধি থাকতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ।
ভুয়া এবং অনিবন্ধিত একটি সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে সড়ক দুর্ঘটনা এবং আহত-নিহতের সংখ্যা নিয়ে অতিরঞ্জিত ও মনগড়া প্রতিবেদন দিয়েছে, যা সত্য নয় দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিআরটিএ ও ঈদ পরবর্তী ছুটির পরে পত্র-পত্রিকাগুলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা বাংলাদেশে গত ৯ মে থেকে ১৬ মে ২০২১ পর্যন্ত ৩৬ থেকে ৫৬টি সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত এবং ১০৭ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।’ মন্ত্রী বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা হয় অস্বীকার করার কিছু নেই, কিন্তু এ ধরনের কল্পিত ও মনগড়া প্রতিবেদন কোথা থেকে আসে সেটাই প্রশ্ন।’ এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেন।