বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন

জুলাই থেকে আরও ভ্যাকসিন আসবে: প্রধানমন্ত্রী

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১

দেশের মোট ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মোট ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। কারণ কোন ভ্যাকসিন কোন বয়স পর্যন্ত দেয়া যাবে এটার একটা সীমাবদ্ধতা আছে। এবং ডাব্লিউএইচও’র নির্দেশ আছে, সেটা বিবেচনায় রেখে এমনকি স্কুল থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সকলেই যাতে ভ্যাকসিন পায় এবং দ্রুত যেন স্কুল খুলতে পারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারি সেই ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন গবেষণা পর্যায়ে থাকতেই আমরা টাকা দিয়ে বুকড করে রেখেছি। কিন্তু ভারতে হঠাৎ করোনা এতো ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেল যে তারা ভ্যাকসিন এক্সপোর্ট করা বন্ধ করে দেওয়াতে সামগ্রিকভাবে কিছুটা সমস্যায় পড়ে গেছি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। এখন আর কোন সমস্যা হবে না। চীন রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশ সকলের সাথে কোম্পানির সাথে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
আশাকরি জুলাই মাস থেকেই আরো ভ্যাকসিন আসবে, ব্যাপকভাবে ভ্যাকসিন প্রদান শুরু করব। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারিমন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী করোনা মোকাবেলা তার সরকারের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী দীর্ঘায়িত হওয়ায় বিগত বাজেটের ন্যায় এ বাজেটেও স্বাস্থ্য খাতকে সার্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। আমরা গত বছর মহামারীর প্রথম ঢেউ সফলভাবে মোকাবেলা করেছি। এখন অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয় ঢেউ রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ফলে এই মহামারী মোকবেলা করে জনস্বাস্থ্য জনজবীন সুরক্ষা করতে আমরা সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এই খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রণোদনা প্রদান ও ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি ব্যবস্থা অব্যাহত রেখেছি। বিগত বছর কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বিশেষায়িত আইসোলেশিন ইউনিট, কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ল্যাবরেটরি কার্যক্রম ও কোভিড চিকিৎসার জন্য নতুন ডেডিকেটেড হাসপাতাল অন্তর্ভুক্তকরণসহ দেশব্যাপী সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য পরিকল্পনা খাতে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা বিগত অর্থবছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি।
সংসদ নেতা বলেন, করোনা মাহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ এখনো বিদ্যমান থাকায় মহামারী মোকাবেলায় যে কোন জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য আমরা এই বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ রাখার ব্যবস্থা করেছি। দ্রুততম সময়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে বিশেষ করে কোরানা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সেবা নিশ্চিত করতে ১০ হাজার ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও স্থাপন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতের অর্জন টেকসই করা ও ভবিষতে মহামারী অভিঘাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সমন্বিত স্বাস্থ্য বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিল গঠন, কারণ আমাদের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণা তেমন ছিল না। আমরা এবার সেটার উপর গুরুত্ব দিয়েছি। সেই সমন্বিত স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান গবেষণা উন্নয়ণ তহবিল গঠন করেছি। সেই তহবিলে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য খাতের প্রকল্প বাস্তবায়নে ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছি দেশের সকল নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান নিশ্চিত করব। এলক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য যত টাকাই লাগুক না কেন আমরা সে টাকা দেব। বাজেটে আমরা ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা বারাদ্দ রেখেছি। সরকার বিভিন্ন উৎস হতে ইতোমধ্যে ১ কোটি ১৪ লাখ ৬ হাজার ডোজ সংগ্রহ করেছি। যদিও যখন ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা শুরু হয় তখন পৃথিবীর সমস্ত জায়গায় যোগাযোগ করেছিলাম। এমনকি হয়তো তখন ডাব্লিউএইচও অনুমোদন দেয়নি, তার আগেই টাকা পাঠিয়ে বুকড করেছি, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনিত ভারতে হঠাৎ করোনা এতো ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেল যে তারা ভ্যাকসিন এক্সপোর্ট করা বন্ধ করে দেওয়াতে সামগ্রিকভাবে কিছুটা সমস্যায় পড়ে গেছি, কিন্তু বর্তমানে আমাদের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। এখন আর কোন সমস্যা হবে না। চীন রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশ সকলের সাথে কোম্পানির সাথে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। আশাকরি জুলাই মাস থেকেই আরো ভ্যাকসিন আসবে, ব্যাপকভাবে ভ্যাকসিন প্রদান শুরু করব।
বিদেশীগামী কর্মীদের বিশেষ সুবিধার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে কর্মীরা বিদেশে যাচ্ছে তাদের ভ্যাকসিনটা আগে দিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। ফাইজারের যে ভ্যাকসিন আসছে ইতোমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি বিদেশে কর্মী যারা যাবে তাদেরকে দুটি ডোজই দিয়ে দেওয়ার। যেন ওখানে গিয়ে তাদের কোয়ারেন্টিন করতে না হয়, তার যেন কর্মস্থলে যেতে পারে তার ব্যবস্থা করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মোট ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। কারণ কোন ভ্যাকসিন, কোন বয়স পর্যন্ত দেয়া যাবে এটার একটা সীমাবদ্ধতা আছে। তাছাড়া ডাব্লিউএইচ’র নির্দেশ আছে সেটা বিবেচনায় রেখে এমনকি স্কুল থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সকলেই যাতে ভ্যাকসিন পায় এবং দ্রুত যেন স্কুল খুলতে পারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারি সেই ব্যবস্থা নেব। এই পর্যন্ত ১ কোটির বেশি ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। ৪৩ লাখ নাগরিক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com