আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ভ্যাকসিন সংগ্রহ দেশের জনগনের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘস্থায়ী প্রতিশ্রুতির সুস্পষ্ট প্রতিফলন। গতকাল সোমবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বিএনপি’র অপরাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতিমধ্যেই দেশে এসেছে প্রায় ৪৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। সময়মত আরো ভ্যাকসিন আসবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কূটনৈতিক দক্ষতা এবং দূরদর্শী নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্যাকসিন সংগ্রহে বাংলাদেশ সফল হবে ইনশাআল্লাহ। দেশে অক্সিজেন নিয়ে কোন সংকট নেই জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, হয়তো কোথাও সমন্বয়ের অভাব হতে পারে তবে যেসব এলাকায় অক্সিজেন সরবরাহ জরুরি সেসব এলাকায় সমন্বয় জোরদারের মাধ্যমে সরবরাহ নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।
সংক্রমণের উর্ধ্বমুখী প্রবণতা রোধকল্পে ঘরে ঘরে সচেতনতার দূর্গ গড়ে তোলার বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, জীবনের প্রয়োজনে বেঁচে থাকার জন্য হলেও আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করি।
সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ অধিবেশনে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যে নিয়ে বিএনপি’র সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি’র এই সমালোচনা বরাবরের মতো দীপ্যমান সত্যকে অস্বীকার করার কসরত মাত্র। বিএনপি ঢালাওভাবে মন্তব্য করলেও সংসদ নেতার কোন বক্তব্যটি অসত্য তা স্পষ্টভাবে বলতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে সংসদ নেতার ভাষণ ছিলো ইতিহাসের কঠিন সত্যপাঠ। তিনি বলেন, যারা মিথ্যার উপর আশ্রয় নিয়ে ও ভর করে রাজনীতি করে, সত্য-প্রকাশিত হলে বিএনপি’র গাত্রদাহ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশের রাজনীতিকে ষড়যন্ত্র, হত্যা আর অগণতান্ত্রিক পথে চালনাকারি বিএনপি কখনো সত্য মেনে নিতে পারে না মনে করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সত্য ও সঠিক ইতিহাস তুলে ধরলে ইতিহাস বিকৃতির জনকদের মর্মজ্বালা বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। বিএনপি’র নির্বাচনের নামে প্রহসন, দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র, অনিয়ম আর দুর্নীতির মাত্রাহীন নিমজ্জ্বন এদেশে রেকর্ড হয়ে থাকবে।
সেতৃুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা ভুলে গেছেন বেগম জিয়া একজন দন্ডিত আসামি, মাসের পর মাস অযথা সময় ক্ষেপন করে বিএনপিইতো বেগম জিয়ার মামলার বিচার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের করা মামলাটি যদি মিথ্যা হয়ে থাকে তাহলে বিএনপি’র আইনজীবীরা তা প্রমাণ করতে পারলেন না কেন? বেগম জিয়ার মামলা, কারামুক্তি এবং চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি নেতারা এক ধরনের রহস্যময় খেলা খেলছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম জিয়ার বিষয়ে অধিকতর মানবিক আচরণ করেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাঁর বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় সাজা স্থগিত রেখে তাঁকে ঘরে অবস্থান করে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই শেখ হাসিনার ঔদার্য্যরে প্রতি আপনাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
বেগম জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সাজানো মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে, বিএনপি নেতাদের এ ধরনের অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ভালো করেই জানেন এ মামলা শেখ হাসিনা সরকার করেনি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের করা এই মামলা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কোন বিষয় নয় এখানে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিশ্বাসী নয় বরং বিএনপিই এদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির পথপ্রদর্শক।
রাজনীতি বা দেশ পরিচালনায় ওয়ার্কিং রিলেশন থাকাটা জরুরি। তাইতো শেখ হাসিনা কষ্ট চেপে বারবার উদারতার হাত বাড়িয়েছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা দরজা বন্ধ করে গুটিয়ে ছিলেন দেয়ালের আড়ালে। পর্দার আড়ালের রাজনীতিই আপনাদের পছন্দের। আর এই নেতিবাচকতার দাবানল বিএনপি’র রাজনীতিকে পত্র-পুষ্পহীন মরুময়তার দিকে নিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ।