টাঙ্গাইলের গোপালপুরে মহামারি করোনায় কর্মহীন হয়ে অর্থাভাবে ৪৫ হাজার টাকায় তিনমাস বয়সী নিজের সন্তানকে বিক্রি করার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন শুক্রবার শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন। জানা যায়, নগদাশিমলা ইউনিয়নের সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের দিন মজুর শাহ আলম ও রাবেয়া দম্পতির তিন পুত্র সন্তান। রাবেয়া জানান, দিন মজুর স্বামী শাহ আলমের উপার্জনে পাঁচজনের সংসার চলেনা। তারমধ্যে করোনায় কয়েকমাস ধরে শাহআলম বেকার। সংসারে বেশ কিছু ঋণ রয়েছে। পাওনাদাররা প্রতিদিনই সেজন্য তাগাদা দিচ্ছিলো। হতাশায় স্বামী গাজায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় পাওনা টাকা পরিশোধ ও সংসারের অনটনের দরুণ তিন মাস বয়সী আলহাজকে বাইশকাইল গৈজারপাড়া গ্রামের সবুজ মিয়া ও স্বপ্না দম্পতির নিকট ১৬ দিন আগে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। গোপালপুর থানার ওসি মোশাররফ হোসেন জানান, সবুজ ও স্বপ্না দম্পতিও নিঃসন্তান। তারা শাহ আলম-রাবেয়া দম্পতির অনটনের সুযোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে শিশুটি কিনে নেয়। আদালতের অনুমতি নিয়ে দত্তক নেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তারা সেটি করেনি। এমতাবস্থায় প্রশাসন সবুজ মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশু আলহাজকে উদ্ধার করে মা রাবেয়া বেগমের কোলে পৌঁছে দেয়। কেউ আগ্রহ প্রকাশ না করায় এবং মানবিক দিক বিবেচনায় থানায় কোন মামলা নেয়া হয়নি। গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ মল্লিক জানান, ঘটনার নেপথ্যে দারিদ্রতা। পরিবারটিকে সার্বিকভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। রাবেয়া বেগমকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আয়া পদে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তাও দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোঃ আতাউল গনি জানান, ওই শিশুর যাবতীয় ভরনপোষণ ও লেখাপড়ার দায়িত্ব নেবে জেলা প্রশাসন।