স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উপলক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের গৃহীত কর্মসুচির আংশ হিসাবেঐতিহ্যবাহী মোবারকগঞ্জ সুগার মিলস লিমিটেড নলডাঙ্গা ঝিনাইদহ এর আয়োজনে ১৬ আগস্ট সোমবার সকাল ১০ টায় কারখানা প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা এবং দুঃস্থদের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মোবারকগঞ্জ সুগার মিলস লিমিটেড এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ারুল আজীম আনার, জাতীয় সংসদ সদস্য, ঝিনাইদহ – ৪। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এস এম জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু,চেয়ারম্যান, কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ। মো: গোলাম রসুল, সভাপতি, মোচিক শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ চিনিকল-কর্মচারী ফেডারেশনের সহ-সভাপতি (৩)। খন্দকার আলমগীর হোসেন (ব্যবস্থাপক অর্থ), আলমগীর হোসেন (ব্যবস্থাপক ফ্যাক্টরি), আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া (ব্যবস্থাপক কৃষি) মো: শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক, মোচিক শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ান, মিথুন পারভেজ, সাইদুর রহমান পিকু, সায়েম বিশ্বাস ফজের আলী প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ আনোয়ারুল আজীম আনার বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোকের দিন। বাংলার আকাশ-বাতাস আর প্রকৃতিও অশ্রুসিক্ত হওয়ার দিন। কেননা পঁচাত্তরের এই দিনে আগস্ট আর শ্রাবণ মিলেমিশে একাকার হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর রক্ত আর আকাশের মর্মছেঁড়া অশ্রুর প্লাবনে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সুবেহ সাদিকের সময় যখন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে নিজ বাসভবনে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে বুলেটের বৃষ্টিতে ঘাতকরা ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল, তখন যে বৃষ্টি ঝরছিল, তা যেন ছিল প্রকৃতিরই অশ্রুপাত। ভেজা বাতাস কেঁদেছে সমগ্র বাংলায়। ঘাতকদের উদ্যত অস্ত্রের সামনে ভীতসন্ত্রস্ত বাংলাদেশ বিহ্বল হয়ে পড়েছিল শোকে আর অভাবিত ঘটনার আকস্মিকতায়। কাল থেকে কালান্তরে জ্বলবে এ শোকের আগুন। ১৫ আগস্ট শোকার্দ্র বাণী পাঠের দিন, স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদাতবার্ষিকী। মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের পরিচালক মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ,বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশ নিয়ে যে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা এঁকেছিল ঘাতকেরা, তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত করেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান সরকার শিল্প বান্ধব সরকার। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আয়োজিত আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকায় তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান। মোচিক শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রসুল তার বক্তব্যে বলেন, আগস্ট মাস এলেই মনে পড়ে যায় সেই ভয়াবহ স্মৃতি, যা আমাদের বেদনার্ত করে তোলে। যে বিশাল হূদয়ের মানুষকে কারাগারে বন্দি রেখেও স্পর্শ করার সাহস দেখাতে পারেনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, অথচ স্বাধীন বাংলার মাটিতেই তাকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার সেই ষড়যন্ত্রের নীলনকশা আজও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। জাতির পিতাকে হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি দীর্ঘ কয়েক যুগ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। পরবর্তীকালে শেখ হাসিনার বারবার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এই শোকের মাসেই গ্রেনেড হামলায় হত্যার চেষ্টা করা হয় জাতির জনকের কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ভাগ্যক্রমে সেদিন তিনি বেঁচে গেলেও এ ঘটনায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী, আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। তাই সময় এসেছে এইসব ঘাতকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার। তিনি আগামীতে মাঠ পর্যায়ে আখ চাষ বৃদ্ধিতে এবং মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের সার্বিক উন্নয়নে সাংসদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, জাহাঙ্গীর সিদ্দিক, উপজেলা চেয়ারম্যান, শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক, মুসিক শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন। আলোচনা সভা শেষে ২০০ জন দুস্থ জনগণের মাঝে খাদ্যসামগ্রীর ১ টি করে ব্যাগ প্রদান করা হয়।যেখানে প্রতিটি ব্যাগে ছিল ৫ কেজি চাল, ১কেজি ডাল, ১ কেজি লবণ, ২ কেজি আলু, ১ কেজি পেয়াজ ও ১ বোতল সোয়াবিন তেল। এছাড়াও উস্থিত দুঃস্থ জনগণের মাঝে মাস্কও বিতরণ করা হয়।