হার্ট অ্যাটাকে বিশ্বে প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যায়। অনেকেই মনে করেন, বয়স বাড়লে কিংবা বেশি বয়স্কদেরই হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। তবে এ ধারণা ভুল। সম্প্রতি বিগ বস রিয়েলিটি শোয়ের বিজয়ী ও অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লা অল্প বয়সেই হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন। তার বয়স কেবল পা দিয়েছিল ৪০ এর কোঠায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫০ এর আগেই হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
জিনগত কারণে বা জন্মগতভাবে হৃদরোগ আছে এমন ব্যক্তি ছাড়াও বর্তমানে যারা হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই ২০-৪০ বছর বয়সী।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ: ১. বুকে তীব্র ব্যথা ২. অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়া ৩. দুশ্চিন্তা ৪. বদহজম
৫. শ্বাসে দুর্গন্ধ ৬. অনিদ্রা ৭. মাথা ঘোরানো ৮. বমি বমি ভাব ৯. শ্বাসকষ্ট ১০. দৃষ্টিবিভ্রম
অল্প বয়সেই হার্ট অ্যাটাক হওয়ার কারণ কী? ১. মাদকাসক্তি ২. মদ্যপান ও ধূমপান
৩. অতিরিক্ত চিন্তা করা বা উচ্চ রক্তচাপ ৪. উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া ৫. শরীরচর্চার অভাব
৬. ডায়াবেটিস ৭. দীর্ঘদিন ধরে ভুল খাদ্যাভ্যাস। এ বিষয়ে ভারতের চিকিৎসক ড. অরিন্দম বিশ্বাস জানান, বর্তমানে অল্প বয়সীদের মধ্যে হৃদরোগ বাড়ছে লাইফস্টাইলের কারণে। বিশেষ করে কম ঘুম। ৮ ঘণ্টার ঘুম অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও অতিরিক্ত চিন্তাও হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
একইসঙ্গে পিৎজ্জা, বার্গার জাতীয় ফাস্ট ফুড থেকে ধমনীতে চর্বি জমছে। যার ফলে রক্ত চলাচলে সমস্যা হয়ে ঘটছে হার্ট অ্যাটাক। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্ট অ্যাটাকের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে বিশেষ সতর্ক হওয়া উচিত। পাশাপাশি শরীরচর্চা করতে হবে নিয়মিত। এ কারণেই হাঁটার অভ্যাসের উপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতে যা করবেন: > বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহারের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। প্রতিবছর হৃদরোগে আক্রান্ত মৃত্যুর ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী ধূমপান। শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগে মৃত্যুর ২৪ শতাংশের পেছনে রয়েছে ধূমপান।
> এশিয়ান পুরুষদের সঠিক ভুঁড়ির মাপ হচ্ছে ৯০ সেন্টিমিটার। আর নারীর ক্ষেত্রে ৮০ সেন্টিমিটার। এর বেশি ভুঁড়ি বাড়লেই বিপদ। এজন্য উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক রাখুন। প্রতিদিন ২৫-৩০ মিনিট হাঁটা, ব্যায়াম, সাঁতার, জগিং, সাইকেল চালানো বা খেলাধুলা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
> একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের আগে থেকে বেশিরভাগ আক্রান্তরই বদহজমের সমস্যা এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যায় ভোগেন। এ সময় শ্বাস নিতেও সমস্যা হতে পারে। এসব বিষয় নজরে পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। > অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনে। এজন্য মানসিক অবসাদ থেকে নিজেকে বাঁচাতে হবে। বয়স্কদের তুলনায় তরুণ-তরুণীরা অনেক বেশি শিকার হচ্ছেন মানসিক অবসাদের। এ কারণে বাড়ছে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর সংখ্যা। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া