বেশকিছু দিন থেকেই কর্মদিবসে রাজধানীতে তীব্র যানজট লক্ষ্য করা গেছে। ভ্যাপসা গরম আর দীর্ঘ যানজট দুয়ে মিলে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে রাজধানীবাসী। সকাল থেকেই অফিসগামী যাত্রীরা যানজটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। সকালের দিকেই রাজধানীর সড়কগুলোতে তীব্র যানজট দেখা যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে যানজটের তীব্রতা বাড়তে থাকে। দিনের শুরু থেকে প্রতিটি সড়কে গাড়ি, রিকশার দীর্ঘ সারি, জনসমাগম দেখা যায়। রিকশা-ভ্যান চালক থেকে শুরু করে অফিসগামী যাত্রী সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।
সরেজমিনে শাহবাগ, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, মহাখালী, বনানী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মেট্রোরেলসহ নানা উন্নয়ন কাজে সড়ক বন্ধ থাকা, সড়ক মেরামত, নিষ্কাশন ব্যবস্থা সচল করতে রাস্তা কাটা ইত্যাদি নানা কারণে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে অফিসগামীদের। আর এতেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে। শাহবাগ থেকে ফার্মগেট হয়ে বিজয় সরণি, ফার্মগেট থেকে পান্থপথ, মহাখালী-বনানী এলাকায়ও যানজট দেখা যায়। হাসান আলী নামের এক যাত্রী বলেন, রাস্তায় একটু যানজট থাকবে, এটা ধরেই বের হয়েছি। কিন্তু এমন যানজটে পড়তে হবে কল্পনাও করিনি। আবুল হোটেল থেকে মেরুল বাড্ডা আসতে এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট লেগেছে। যানজট ধরেই সাধারণত এই রাস্তা আসতে ৩০ মিনিটের বেশি লাগে না। যানজট ও গরমে নারীদের ভোগান্তি আরও চরমে। ফার্মগেটে বেশ কয়েকজন নারীকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এসময় বাস পেলেও ভিড় ঠেলে বাসে উঠতে তাদের বেগ পেতে হয়।
ফার্মগেটে বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা অফিসগামী এক নারী জানান, ‘মহিলাদের বাসে নিতে চায় না। মিরপুরে যাবো। তাই প্রায় সময়ই অফিসে যেতে লেট হয়। এইগুলো তো আর অফিসকে বলা যায় না।’ পান্থপথ থেকে এক যাত্রী যাবেন আজিমপুর। তিনি বলেন, ভ্যাপসা গরম আর ভয়াবহ যানজটে মাথানষ্টের উপক্রম হয়েছে। সকাল থেকে রাস্তায় যানবাহনের ব্যাপক চাপ। নির্দিষ্ট আসন ব্যতীত অতিরিক্ত বা দাঁড় করিয়ে যাত্রী না নেওয়ার কথা থাকলেও শর্ত লঙ্ঘনের চিত্র দেখা গেছে প্রায় প্রতিটি পরিবহনেই। অনেক পরিবহন নিয়ম ও শর্ত মেনে চলছে না। করোনার মধ্যে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন যাত্রীরা। রাস্তায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেশি হওয়ায় কিছুক্ষণ পরপরই সিগন্যালে দীর্ঘ সারিও দেখা যায়। যানজটের কারণে প্রচুর মানুষ যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে যাওয়ার পথ ধরেছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, রাজধানীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে। এর মধ্যে মেট্রোরেলের কাজসহ অনেক রাস্তায় বর্তমানে সংস্কার ও উন্নয়নমুলক কাজ চলছে। এরফলে রাস্তার পরিমাণ কমে সরু হয়ে গেছে। এছাড়া লকডাউন শিথিল হওয়ায় লোকজন বেশি বের হচ্ছে। বাইরের জেলাগুলো থেকেও প্রচুর গাড়ি ঢুকছে। পাশাপাশি রাস্তায় নতুন নতুন গাড়ি নামছে, এ রকম অনেক কারণে রাজধানীতে যানজট ব্যাপক বেড়েছে। তিনি আরও বলেন,তবে রাস্তার কাজগুলো শেষ হলে যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে।