শেষ সময়ে এসে শতভাগ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পে ভাটা পড়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সকল মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল সরকার। ডিসেম্বরেই এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আরইবি এখনও শতভাগ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ নিতে পারেনি। অক্টোবরের সরকারি হিসাব বলছে এখনও দুই লাখ ২৭ হাজার ৫৩৬ গ্রাহকের ঘরে যায়নি বিদ্যুৎ।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি মন্ত্রণালয়ে যে হিসাব দিয়েছে তাতে দেখা যায়, ১১০ উপজেলায় তাদের বিতরণ নেটওয়ার্ক রয়েছে। এসব উপজেলায় আরইবির পাশাপাশি তারাও বিদ্যুৎ বিতরণ করছে। এসব উপজেলার ৯ হাজার ৭৯৫টি গ্রামে পিডিবি বিদ্যুৎ দিচ্ছে। গ্রামগুলোর মোট গ্রাহক ৩৫ লাখ ১১ হাজার। এরমধ্যে এক হাজার ৮৯৫টি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে পিডিবি। যেখানে মোট গ্রাহক ৯৭ হাজার ৫৩৬ জন। পিডিবি তার অবিদ্যুতায়িত এলাকার ৯৭ দশমিক ২২ ভাগ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে। বাকি রয়েছে দুই দশমিক ৭৮ ভাগ গ্রাহক। পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের বেশিরভাগ অবিদ্যুতায়িত এলাকা পার্বত্য তিন জেলায়। এসব এলাকায় লাইন নির্মাণ বেশ জটিল। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায় লাইন নির্মাণের জন্য খুঁটি ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ পরিবহন করা কঠিন কাজ। এরপরও চেষ্টা করে যাচ্ছি। সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা প্রতিমাসেই নতুন নতুন গ্রাম বিদ্যুতের আওতায় আনছি। গত সেপ্টেম্বরেও ২৮১টি নতুন গ্রামের ৯ হাজার ৫৪২ জনকে সংযোগের আওতায় এনেছি।
মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, পাহাড় ও নদীর কিছু বিচ্ছিন্ন চরে বিদ্যুৎ যায়নি। তবে গ্রিডের আওতায় রয়েছে এমন একটি এলাকাও বাকি নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নদীর তলদেশ দিয়ে ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য ব্যয় যেমন বেড়েছে, সময়ও বেশি লাগছে। মন্ত্রণালয়ে শতভাগ বিদ্যুতায়নের যে হিসাব আরইবি দিয়েছে তাতে দেখা যায়, ৪৬২ উপজেলায় ৮৪ হাজার ৭০০ গ্রামে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছে সংস্থাটি। তাদের মোট গ্রাহক তিন কোটি ২২ লাখ। প্রতিষ্ঠানটির আওতায় থাকা ২৩৪ গ্রামের দেড় লাখ মানুষ এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি। তবে মোট গ্রাহকের ৯৯ দশমিক ৬০ ভাগই সংযোগের আওতায়। আরইবি সূত্র বলছে, গত সেপ্টেম্বরে ৫৫টি গ্রামের এক লাখ ৮৭ হাজার মানুষ সংযোগ পেয়েছে। আরইবির এক কর্মকর্তা জানান, পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলার একটি অংশ শতভাগ বিদ্যুতায়নের বাইরে রয়েছে। তবে চেষ্টা করছি দ্রুত কাজ শেষ করতে। এ ছাড়া দেশের দুই বিতরণ কোম্পনি ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) এবং নর্দার্ন ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) আওতায় কিছু দুর্গম এলাকা রয়েছে। অবশ্য এসব গ্রাহককে সোলার সিস্টেমে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয়েছে। -বাংলাট্রিবিউন