সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা
জাতীয় সংসদে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে আইন করার দাবি উঠেছে। সব ধরনের গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া প্রচলন করতে সংসদে আইন পাস করার দাবি করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। গতকাল শনিবার (২৭ নভেম্বর) মহাসড়ক বিল, ২০২১ এর সংশোধনীর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি করেন। অবশ্য তার বক্তব্যে জবাব দিতে গিয়ে হাফ ভাড়ার বিষয়ে সরকারের ইতিবাচক অবস্থান তুলে ধরলেও আইন করার বিষয়ে কিছু বলেননি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিআরটিসি বাসে হাফ ভাড়া চালু করা হয়েছে। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। এটা সারাদেশেই বিআরটিসি বাসের জন্য চালু হবে।
তিনি বলেন, বেসরকারি যে গণপরিবহন রয়েছে, তাদের ওপর আমরা জোর করে চাপিয়ে দিতে পারি না। তারা তো সরকারের অধীনে না। সরকারের সঙ্গে হয়তো কাজ করে। বেসরকারি গণপরিবহনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত তাদের নেওয়া দরকার। সামাজিক দায়বদ্ধতা ও জনস্বার্থ বিবেচনায় তাদের অনুরোধ করা হয়েছে, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকেও তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আজ বিআরটিএতে বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে একটা বৈঠক রয়েছে। বৈঠকে আমরা আশা করি ইতিবাচকভাবে তারা শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেবেন। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ বিবৃতি দিয়ে ছাত্রদের হাফ ভাড়ার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। যেখানে সাংগঠনিকভাবে হাফ ভাড়ার পক্ষে সেখানে তারা হামলা কেন করতে যাবে? যিনি হামলার কথা বলেছেন তাকে বলবো তারা যে ছাত্রলীগ তার প্রমাণ করুন।
এদিকে সংসদে আজ মহাসড়ক তৈরিতে অতিরিক্ত ব্যয়ের বিষয়ে সমালোচনা করেন রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, শুধু পাশের দেশ ভারত কিংবা চীন নয়, ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশের সড়ক নির্মাণে বেশি ব্যয় হয়। সেই কারণে এ দেশের মহাসড়ক পৃথিবীর মহাসড়ক বলে মনে হয় না। ভীনগ্রহের মহাসড়ক হতে পারে। ঢাকা-ভাঙ্গা-মাওয়া মহাসড়কের কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হয়েছে ২০০ কোটি টাকা, যা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। এর আগে রুমিন ফারহানা তার বক্তব্যে বলেন, সড়ক নিরাপত্তা দেওয়ার দাবির সঙ্গে সঙ্গে হাফ পাসের একটা দাবি বহুদিন ধরে শিক্ষার্থীরা করছে। অর্থাৎ অর্ধেক ভাড়ায় যেন শিক্ষার্থীরা চলতে পারে। স¤প্রতি দেশের শহর এলাকার কিছু বাসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেওয়া হয়। কিন্তু এটা নিয়ে কোনো আইন বা নীতিমালা না থাকায় ভাড়া বাড়ানোর পরে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, স¤প্রতি বাসভাড়া বাড়ানোর পরে মালিকপক্ষ হাফ ভাড়া বন্ধ করে দিয়েছে। এরই জেরে শিক্ষার্থীরা পথে নেমে এসেছে। কিন্তু তাদের ওপর ছাত্রলীগ, যুবলীগের কর্মীরা হামলা করেছেন। তিন বছর আগে যখন আন্দোলন হয়েছিল, তখন হেলমেট পরে তারা চেহারা লুকানোর চেষ্টা করেছিল। এবার যখন ঝাঁপিয়ে পড়লো হেলমেট পরা দেখিনি। আইন মেনে ব্যবসা করতে হয় ব্যবসায়ীদের জানিয়ে বিএনপির এ সংসদ সদস্য বলেন, সরকার বলে বেসরকারি গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের নেই। কথাটি সঠিক বা সত্য নয়। কারণ সরকার যদি ব্যবসার জন্য কোনো আইন করে সেটা মেনে নিয়ে ব্যবসা করতে হয় ব্যবসায়ীদের। রুমিন ফারহানা বলেন, সরকার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও বেসরকারি পরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার আইন করতে পারে। সেক্ষেত্রে সবাইকে সেটা মানতে হবে। শুধু শহর এলাকার বাসে নয়, সব গণপরিবহনে অবলিম্বে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া দিয়ে যাতায়াতের আইনি বিধান করা হোক।