মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

মেহেরপুরের বাঁধাকপির ভোক্তা এখন বিশ্ববাজারে

বাসস:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২২

কৃষিনির্ভর জেলা হিসেবে সবজি উৎপাদনে সুনাম রয়েছে মেহেরপুরের। দেশের চাহিদার ১৫ শতাংশ মেটায় এই জেলার সবজি। এখন মেহেরপুরের বাঁধাকপি রফতানি হচ্ছে বিশ^বাজারে।
এক সময় সবজি চাষিরা ভরা মৌসুমে ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ হতেন। কখনও-কখনও চাষের খরচও তুলতে পারতেন না তারা। কষ্টের সবজি গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে বিক্রি করতো হতো। এখন মেহেরপুরের বাঁধাকপি রফতানি হচ্ছে বিদেশ। প্রতিটি পাতাকপি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান কিনছে ১৪ থেকে ১৬ টাকায়। বিভিন্ন দেশের বাজারে প্রতিটি কপি বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশী টাকায় ৬০ থেকে ১০০ টাকায়। জেলার উৎপাদিত সবজির মধ্যে বাঁধাকপি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুরে রফতানি হচ্ছে।
একটা সময়ে গাংনীর সাহারবাটিতে সবজি চাষ হতো। লাভবান হওয়াতে জেলার প্রতিটি গ্রামে সবজি চাষ হয়। ভরা মৌসুমে এসব সবজির দাম কমে যেত। এখন সেই সবজি দেশের বাইরে চাহিদা থাকায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছে। কৃষকরা রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে বাঁধাকপি সরবরাহ করছেন বেশি দাম। মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামে কীটনাশক মুক্ত বাঁধাকপি রপ্তানি পণ্যের তালিকায় যুক্ত হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন সম্ভাবনাময় খাতও তৈরি হয়েছে। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় বিদেশে রপ্তানি যোগ্য বাঁধাকপি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। কৃষি বিভাগ চাষীদের সার্বিক সহযোগিতা করায় পাতাকপির উৎপাদন বৃদ্ধি, গুনগতমান বজায় রাখার পাশাপাশি খরচও কমছে। কৃষি বিভাগের হিসেবে দেশের গন্ডি পেরিয়ে চলতি বছরে মেহেরপুর থেকে বিষ মুক্ত ১৫শ’ টন বাঁধাকপি সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানে রপ্তানি হচ্ছে।
রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান এগ্রো ফ্রেশ কোম্পানির মাধ্যমে এসব পাতাকপি রপ্তানি হচ্ছে। মাঠ থেকেই পাতাকপি কিনে নিচ্ছেন রপ্তানিকারন প্রতিষ্ঠান। আগামী বছরে আরো বেশি কৃষককে এ সুবিধার আওতায় আনতে কৃষি বিভাগকে আরো বেশি সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে কৃষকরা।
মেহেরপুরের সাহারবাটি, বন্দর, মোনাখালি, সোনাপুর, কাথুলিসহ বিভিন্ন গ্রামে এই কপির আবাদ হচ্ছে। আর্থিক লাভের কথা চিন্তা করে সবজি উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। প্রতিদিন মেহেরপুর থেকে লরি ভরে নেয়া হচ্ছে চিটাগাংয়ের উদ্দেশ্যে। যা চিটাগাং থেকে সুমদ্র পথে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি হচ্ছে। দেশের বাজারে এক ট্রাক বাঁধাকপি চাষি পেত ৪০-৪৫ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে দেশের বাইরে বিক্রি করে চাষি পাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলাতে ১ হাজার হেক্টর জমিতে পাতাকপি চাষ করেছেন কৃষকরা। সাধারণত শীতের মধ্যেই পাতাকপি চাষ ও হারভেস্টিং শেষ হয়ে যায়। চলতি মৌসুমে চারটি দেশ ১ হাজার ৫০০ টন বাঁধাকপির নেয়ার চাহিদা দিয়েছে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে। সে মোতাবেক সরবরাহ করা হবে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায়। কৃষকদের কাছ থেকে কপিগুলো সংগ্রহ করছেন রপ্তানীকারকরা।
রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোল শাখা থেকে জানা গেছে, চারা রোপণের পর থেকে কপি সংগ্রহ করা পর্যন্ত নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে রফতানি উপযোগী করে তোলা হয়।
সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের চাষি বাবর আলী বলেন, আমার দেড় বিঘা জমিতে বাঁধাকপির চাষ করেছি। জমি থেকেই এক ব্যবসায়ী কিনে নিয়েছেন। তারা সাদা প্যাকেটে মুড়িয়ে বস্তাবন্দি করে ট্রাকে নিয়ে যান চট্রগ্রাম বন্দরে। আমি দেড় বিঘা জমির বাঁধাকপি বিক্রি দিয়েছি ৯০ হাজার টাকায়। আমার খরচ হয়েছিলো ৩০ হাজার টাকা।
মোনাখালী গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, আমার নিজের লরি আছে। কৃষকের কাছে থেকে কিনে আমিন ট্রেডার্স নামের দিনাজপুরের একটি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দিই। আবার অনেক সময় রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও এসে সরাসরি কৃষকের কাছে থেকে কিনে লরি ভরে নিয়ে যায়। প্রতি লরি ৭০-৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। দেশের বাইরে এগুলো যাচ্ছে তাই চাষিরা এমন দাম পাচ্ছে। তা না হলে ৪০-৪৫ হাজার টাকা দাম হতো।
মেহেরপুর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ বলেন, আমাদের নিরাপদ সবজির বাজার তৈরি করতে পারলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এবছর মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম ও তাইওয়ানে নিরাপদ সবজি হিসেবে বাঁধাকপি বাংলাদেশ থেকে রফতানি হচ্ছে। অন্যান্য দেশেও বাড়ছে নিরাপদ এই সবজির চাহিদা। কোনভাবেই যেনো এ সুযোগ হাতছাড়া না হয় সে বিষয়ে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com