বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার্থে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী সব সময় আপসহীন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমি আমার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে রুহুল আমিন গাজীর আপসহীন মনোভাব দেখেছি। বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার্থে, গণতন্ত্রকে রক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ করে আপনাদের লেখার স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তিনি আপসহীন।’ গতকাল বুধবার (৩০ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স হলে সদ্য কারামুক্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ঢাবির সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান আকন্দ, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদার, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধানসহ অন্য সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাংবাদিকদের অত্যাচার-নির্যাতন নতুন নয়। ক্ষমতাসীনরা সুযোগ পেলেই যারা সত্য কথা লেখেন তাদেরকে পাকড়াও করার চেষ্টা করেন। তাদেরকে নির্যাতন করেন, কারাগারে নিক্ষেপ করেন। অনেক সময় তাদেরকে কেটে টুকরা টুকরা করে দেন। এমনও হয়েছে খাশোগির (সৌদি সাংবাদিক) লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি।’ তিনি বলেন, ‘এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হচ্ছে। আমি দেখলাম, কয়েকজন সাংবাদিক ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়ে গেছে। আমাদের দেশে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন একটি ভয়াবহ অবস্থা চলছে। এখানে প্রফেসর আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী আছেন, আমাদের তো অনেক বয়স হয়েছে কিন্তু এত খারাপ অবস্থা আমরা আগে কখনো দেখিনি। যেখানে কোনোপ্রকার গণতন্ত্রের মূল্যবোধ, ন্যূনতম স্বাধীনতাবোধ নেই। যারা চাকর তারা যদি মালিক বনে যায় তখন তো দেশের এ অবস্থা হবেই।’
‘আজকে দেশে এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। জনগণ টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছেন। কারণ নিত্যপণ্যের দাম এত বৃদ্ধি পাচ্ছে যে চাল-ডাল কেনার টাকা তাদের কাছে নেই। আর সেই সময় আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে শিল্পী এনে কনসার্টে নিজে গিয়ে গান শুনছেন। যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আমাদের দেশের সরকারী কর্মকর্তারা টরেন্টো ফ্লাইটে করে বাইরে যাচ্ছে। সেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে,’ বলেন মির্জা ফখরুল।
ন্যায্যমূল্যে কার্ড দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে গলা উঁচিয়ে বলা হচ্ছে, এক কোটি ন্যায্যমূল্যের কার্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু আজকে পত্রিকায় দেখলাম আমার ঠাকুরগাঁওয়ে যাকে কার্ড দেয়া হয়েছে তিনি আওয়ামী মহিলা লীগের সভানেত্রী। তার দোতলা বাড়ি কিন্তু তার পাশেই একজন দুস্থ গরীব মানুষ, তিনি কোনো কার্ড পাননি।’
রুহুল আমিন গাজীর কারাবন্দিত্ব সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের এই অবস্থায় গাজী ভাই ১৭ মাস জেলে ছিলেন। আমি কিন্তু খুব অবাক হইনি। কারণ তিনি একটা ‘ভয়ানক’ অপরাধ করেছেন। অপরাধ কি? একজন ব্যক্তি, যাকে প্রভু মনে করা হচ্ছে তার সম্পর্কে তিনি কথা বলেছেন। এটা তো বড় অপরাধ।’