করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করাতে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে এসেছিলেন ফাতেমা আক্তার নামে এক নারী। ১২ ঘণ্টা ধরে বসে ছিলেন একটা পরীক্ষা করানোর জন্য। শুধু ফাতেমা নন এমন আরও অনেকেই বসে থাকেন হাসপাতালের গেটে।
গত মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে রাজধানীর এই হাসপাতালে আসেন ফাতেমা। কিন্তু পরদিন (বুধবার) সকাল ৯টার আগে নমুনা সংগ্রহ শুরু হবে না। অগত্যা লাইনে বসে থাকতে হয় তাকে। মুখে মাস্ক লাগিয়ে শুধুমাত্র করোনার একটি পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা সময় বসেছিলেন তিনি। তার পাশে একটি পানীয়ের বোতল দেখা গেছিল। ‘কখন আসবে পালা’- হয়ত গুণতে হয়েছিল এমন অনিশ্চিত সময়!
বসে থাকতে থাকতে ফাতেমা কখনো তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন, আবার কখন এদিকে সেদিক চেয়ে থাকেন। দেখেন তার মতো কত লোক এসেছেন করোনা পরীক্ষার জন্য। তার আশেপাশে অনেক মানুষকে শুয়ে-বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল। অবশ্য সেদিন ফাতেমার পরীক্ষা হয়েছিল কি না; জানা যায়নি।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার দেশে করোনাভাইরাসে ৩৫ জনের মৃত্যু ও ২৪২৩ জন শনাক্ত হয়েছে, সুস্থ হয়ে উঠেছে ৫৭১ জন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দুপুর আড়াইটায় মহাখালী থেকে নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘আমরা গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০টি ল্যাবের মধ্যে নমুনা সংগ্রহ করেছি ১৩ হাজার ৭৮৮ টি। নমুনা পরীক্ষা করেছি ১২ হাজার ৬৯৪টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ২৭৭টি। ২৪ ঘণ্টায় এই সংগৃহীত নমুনা থেকে শনাক্ত রোগী পেয়েছি ২ হাজার ৪২৩ জন। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে ৫৭ হাজার ৫৬৩ জন। শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। ‘২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ৫৭১ জন। মোট সুস্থ হয়েছে ১২ হাজার ১৬১ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছে ৩৫ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু দাঁড়ালো ৭৮১ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।’
এর আগে বুধবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল ২ হাজার ৬৯৫ জন, মারা গেছে ৩৭ জন। তার আগের দিন মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত হয়২ হাজার ৯১১ জন, মৃত্যু হয় ৩৭ জনের।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। আর গত ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে দিনে দিনে এর সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। (সূত্র : আমাদের সময়)
খপ/প্রিন্স