চিকিৎসকরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার (১১ জুন) বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ডাক্তারদের কাছে যতটুকু শুনেছি, তার (খালেদা জিয়ার) একটা মাইল্ড হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। হাসপাতালে থাকতে থাকতেই তার আরেকটা উপসর্গ এসে যায়। সেটা হচ্ছে তার সাফোকেশন শুরু হয়, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নেন যে, আর বিলম্ব না করে তার এনজিওগ্রাম করবেন। তিনি বলেন, এনজিওগ্রাম করে দেখা গেছে তার মেইন আর্টারিটা ৯৯ পারসেন্ট ব্লক। সেখানে সফলভাবে স্টেইন্ট করেছেন। ডাক্তাররা আশাবাদী, এই ট্রিটমেন্টের ফলে তিনি আপাতত হার্টের যে সমস্যা সেটা থেকে সাময়িকভাবে রিলিভড হলেন। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে বহুবার খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজ পর্যন্ত তার (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার জন্য, তাকে যে বিদেশে পাঠানো দরকার সেই বিষয়টাকে সম্পূর্ণ বাতিল করে দিয়ে যে ব্যবস্থাটা বলেন, সেটা সম্পূর্ণভাবে সঠিক নয়। আজ আবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আরও প্রমাণিত হলো, অবিলম্বে বিদেশে উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে না পারলে তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এখনো দলীয়ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করবো। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। জনগণের দাবি তার চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হোক।
তিনি বলেন, যদিও তারা অনির্বাচিত, তবুও আজ আমি আবার তাদের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষার জন্য দেশের বাইরে তার চিকিৎসা করার ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অন্যথায় আমরা আবারো বলছি, সব দায়দায়িত্ব কিন্তু এই সরকারকে বহন করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও বেগম সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সাল থেকে খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন। দুই হাজার কুড়ি সালে তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে কারাগারের বাইরে আছেন, তবে এজন্য নানা বিধিনিষেধ পালন করতে হয় তাকে, যার মধ্যে রয়েছে – রাজনীতিতে অংশ না নিতে পারা, বিদেশ যেতে না পারা ইত্যাদি।
খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ২০২১ সালের নভেম্বরই চিকিৎসকরা জানিযেছেন,তার চিকিৎসা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানিতেও পর্যাপ্ত নেই। কিছু বিশেষায়িত কেন্দ্রে এর চিকিৎসা হয়। সাধারণত সারা বিশ্ব থেকে রোগীদের সেখানে নেওয়া হয়। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্যে নিতে চায় পরিবার। কিন্তু আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।