ঈদযাত্রার আজ চতুর্থ দিন গতকাল শুক্রবারে (৮ জুলাই) কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় সবক’টি ট্রেনেই শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এ কারণে কমলাপুরে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। প্ল্যাটফর্মে এবং যে দুই-একটি ট্রেন আসছে, সেগুলোর বগিতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।
টিকিট কেটেও সিট পাননি অনেকে, উঠেছেন ছাদে। অনেকে টিকিট ছাড়াই দাঁড়াচ্ছেন প্লাটফর্মে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাদের থামাতে পারছে না। রাজশাহী কমিউটার ট্রেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে বিকাল ৪টার। যদিও ট্রেনটি যাত্রার সময় ছিল দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে।
নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস বেলা ৩টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল, কিন্তু ৪টা ১৫ মিনিটেও ছেড়ে যায়নি। রাজশাহী সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও ৪ ঘণ্টা দেরি হবে। সাড়ে ৫টায় সম্ভাব্য সময় দিয়েছে রেলওয়ে। তারাকান্দির যমুনা এক্সপ্রেস, সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামের সুবর্ণ এক্সপ্রেসÍ সবক’টি শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে। এ ট্রেনগুলো এখনও ছাড়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
কমলাপুর স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, এসব ট্রেনের যাত্রীরা শুয়ে-বসে অপেক্ষা করছেন। ট্রেন দেরি হচ্ছে, সঙ্গে গরমে হাঁপিয়ে উঠেছে প্রাণ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। অনেকে স্টেশনে বসেই দুপুরের খাবার সেরেছেন। যেগুলো ট্রেন ইতোমধ্যে ছেড়ে গেছে, সেগুলোতে যারা টিকিট পাননি বা বগিতে উঠতে পারেননি, তারা ছাদে উঠেছেন। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বেশিরভাগ দূরপাল্লার ট্রেন ছেড়ে গেছে।
তবে বাড়ি ফেরার আনন্দের কাছে ভোগান্তি তুচ্ছ মনে করছেন যাত্রীরা। রাজশাহীগামী সিল্ক সিটি ট্রেনের যাত্রী আসাদ নূর বলেন, ‘এত ভোগান্তি সহ্য করে টিকিট কেটেছি। এখন যাত্রাকালেও ভোগান্তি। টিকিট কেটেও নিজের সিট পেতে চরম বেগ পেতে হবে। আড়াইটার ট্রেন ৪ ঘণ্টা দেরি করলো। এখন শুনছি সাড়ে ৫টায় যাবে। তারপরও বাড়ি যাচ্ছি এটাই আনন্দ।’ কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানিয়েছেন, ট্রেনে অন্তত ৫৫ থেকে ৬০ হাজার মানুষ রাজধানী ছাড়তে পারবে। দিনে ও রাতে ৩৭ জোড়া ট্রেন কমলাপুর থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাবে। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে প্রতিটি ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে। মানুষের এত ভিড় যে, তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, যেহেতু মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তাই তাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সার্বিক ব্যবস্থাপনা ঠিক আছে কিনা, তা যাচাই করে ট্রেন ছাড়া হচ্ছে। এ কারণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।