রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে বিএনপির নেতা কর্মীদের কাজ করতে হবে বনশ্রী আফতাব নগর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি বাবলু পন্ডিত, সম্পাদক জহুরুল ইসলাম ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ১৫তম সভা মহানগরী জোন আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মাইলস্টোন কলেজের কৃতিত্ব স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৮৯তম জন্মবার্ষিকী নগরকান্দায় দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ওসি, সাংবাদিকসহ আহত- ৩০ কালীগঞ্জে নানা সংকটে গ্রাম আদালত সুফল পেতে প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ কটিয়াদীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ মুন্সীগঞ্জে লুন্ঠিত মালামালসহ ৭ ডাকাত গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বর্ণিল পিঠা উৎসব

আশ্রয় চেয়ে বাসায় ঢুকে শিশু চুরি করতো তারা

খবরপত্র ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৫ জুলাই, ২০২২

রাজধানীর বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে শিশু চুরি করে নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে নিজেদের বাচ্চা বলে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করতোÍ এমন একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব। তারা নিজেরা স্বামী-স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) একটি শিশু চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে কামরাঙ্গীরচর থানাধীন হুজুরপাড়া বেইলি রোড এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় শিশুটিকেও উদ্ধার করা হয়। র‌্যাবের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেফতার দুজন হলো সুমন (২০) ও মুন্নি (১৮)। তারা শিশু চুরি চক্রের সক্রিয় সদস্য। এছাড়া সুমন একটি ছিনতাই মামলারও আসামি। ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত সে। তারা এর আগেও বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাসাবাড়ি থেকে শিশু চুরি করে অনেকের কাছে বিক্রি করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে জানিয়েছে। এছাড়া এ চক্রের সদস্যরা এর আগেও বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তথ্য পেয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।
র‌্যাব বলছে, তারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে যেসব বাসা বাড়িতে ছোট শিশু রয়েছে, সেসব বাড়িগুলো টার্গেট করে। সেখানে গিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে এবং নিজেদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে তাদের কাছে সহায়তা চায়। অনেক ক্ষেত্রে তাদের বাসা বাড়িতে থাকার জন্য বিভিন্ন ফন্দি ফিকির আটে। যাদের এসব ফন্দিফিকিরে আটকাতে পারে, সময় সুযোগ বুঝে তাদের বাসা থেকে বাচ্চা নিয়ে চম্পট দেয়। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতেও শিশু চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে এই চক্রটি। চুরি করা শিশু কাদের কাছে বিক্রি করা হতো এবং কী পরিমাণ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে- এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে সাত মাস বয়সী এক শিশু চুরির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে র‌্যাব ১০। পরে কর্মকর্তারা জানতে পারেন, কামরাঙ্গীরচরের ঝাউলাহাটি এলাকায় ভাড়া বাসায় বাস করে সোনিয়া আক্তার (২১) ও তার স্বামী সাগর (২৩)। সাগর পেশায় প্লাস্টিক কারখানার শ্রমিক। সোনিয়ার ভাসুর শাহজাহান (২৮) একজন রিকশাচালক। গত ১৩ জুলাই কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মুন্নি ও সুমন নামে দুজন ব্যক্তির সঙ্গে শাহজাহানের দেখা হয়। তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আশ্রয়ের জন্য শাহজাহানের কাছে আকুতি জানায়। তাদের থাকার জন্য ভাই সাগরের বাসায় নিয়ে যায়। ভাই সাগর ও সাগরের স্ত্রী সোনিয়া মুন্নি ও সুমনকে তাদের বাসায় থাকার জন্য জায়গা দেয়।
পরের দিন ১৪ জুলাই সকালে যথারীতি সাগর ও শাহজাহান তাদের কাজের জন্য বের হয়ে গেলে সুমনও তাদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে। দুপুরের দিকে সাগরের স্ত্রী সোনিয়া তার ৭ মাসের শিশুকন্যা মোছাইফা ইসলাম জান্নাতকে মুন্নির পাশে তাদের খাটের ওপর শুইয়ে রেখে দুপুরের খাবার তৈরির জন্য রান্না ঘরে যায়। কিছুক্ষণ পর সোনিয়া তার মেয়ের কোনও সাড়া না পেয়ে এবং মুন্নিকে দেখতে না পেয়ে চিৎকার করে আশপাশের লোকজনকে জড়ো করে। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে মোবাইল ফোনে তার স্বামী ও ভাসুরকে ঘটনাটি জানায়।
এ ঘটনায় কামরাঙ্গীরচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরে র‌্যাব ১০-এ একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। পরে র‌্যাবের কর্মকর্তারা বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে চুরি যাওয়া ৭ মাসের শিশু মোছাইফা ইসলাম জান্নাতকে কামরাঙ্গীরচর থানার হুজুরপাড়া বেইলি রোড এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করে। এ সময় গ্রেফতার করা হয় শিশু চুরির সঙ্গে জড়িত ২ জনকে।
র‌্যাব-১০ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার তারিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই চক্রের সদস্যদের শিশু চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পাই আমরা। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিকে অভিযান চালিয়ে সাত মাস বয়সী শিশুকন্যাকে উদ্ধার করি। সেইসঙ্গে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।’ তিনি বলেন, এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িতÍ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারা মূলত বিভিন্ন নিম্ন শ্রেণির রিকশাওয়ালা, সিএনজি চালকদের টার্গেট করে রিকশা ও সিএনজিতে ওঠে নিজেদের অসহায়ত্বের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে চালকদের ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করতো। ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদে পড়ে যারা তাদের নিজেদের বাসায় থাকার সুযোগ করে দিতো, তারপর সে বাসায় ছোট শিশু কিংবা আশেপাশের বাসায় শিশু থাকলে তাদের নিয়ে চম্পট দিতো।’ অপরিচিত কাউকে তার পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বাসায় ঢোকার কিংবা থাকার জায়গা দেওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।-বাংলাট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com