কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল এক্সপ্রেসের বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তবে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন তাঁরা। গতকাল শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আবদুল আওয়ালকে (৩০) শুক্রবার ভোর ৫টায় গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সুত্রাপুর টানকালিয়াকৈর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। তিনি ওই উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা। পরে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে একই উপজেলার সোহাগপল্লী এলাকা থেকে নুরনবীকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়। নুরনবী কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ধুনারচর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার শিলাবহ পশ্চিমপাড়া গ্রামে বসবাস করেন।
নুরনবীর কাছ থেকে ডাকাতিকালে লুট করা একটি মুঠোফোন সেট উদ্ধার করা হয়। নুরনবী পুলিশকে জানিয়েছেন, লুণ্ঠিত আরও একটি মুঠোফোন সেট তাঁর কাছে ছিল, সেটি তিনি এক টোকাইকে দিয়ে দিয়েছেন। পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, গ্রেপ্তার দুজনকে কাল শনিবার আদালতে হাজির করা হবে। এই দুজন বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভুক্তভোগী ওই নারীর সামনে হাজির করা হবে। এ জন্য আদালতের অনুমতি নেওয়া হবে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হওয়া রাজা মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল এক্সপ্রেসের একটি বাস নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে যাত্রাবিরতি করে। সেখান থেকে যাত্রা শুরুর পর তিন দফায় যাত্রীবেশী কয়েকজন ডাকাত বাসে ওঠে। বাসটি টাঙ্গাইল অতিক্রম করার পর ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে বাসটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। তারা যাত্রীদের হাত, পা, চোখ বেঁধে তাঁদের সব লুটে নেয়। এ সময় বাসে থাকা এক নারী যাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে বাসটি টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের দিকে নিয়ে যায় ডাকাতেরা। দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাসটি মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া নামক স্থানে রাস্তার খাদে পড়ে গেলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা যাত্রীদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ওই বাসের এক যাত্রী বাদী হয়ে মধুপুর থানায় বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় মামলা করেন।