দীপালি উৎসবকে সামনে রেখে উপমহাদেশের বৃহত্তম বরিশাল মহাশ্মশানে দিপালী উৎসবের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মৃত স্বজনদের সমাধি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও রংয়ের কাজ শেষ হয়েছে আগেই। রোববার (২৩ অক্টোবর) প্রায় দুই’শ বছরের অধিক সময় ধরে চলা এই শ্মশান দীপালী উৎসব এবারেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পালিত হবে। মোমবাতি ও প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠবে পুরো নগরীর কাউনিয়া এলাকার মহাশ্মশান। এদিকে সুষ্ঠভাবে বৃহৎ এই শ্মশান দিপালী উৎসব পালনে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে শ্মশান কমিটি।ইতিমধ্যে দিপাবলী উৎসব নির্বিঘ্ন, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গত (১৬ অক্টোবর) আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বরিশাল মেয়র, পুলিশ কমিশনার, এনএসআই, ডিজিএফআই প্রতিনিধি ও মহাশ্মশান কমিটির নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার বলেন, ২০০ বছরের অধিক সময় ধরে চলা এই মহাশ্মশানে দীপালি উৎসব এবারো অনাড়ম্বর পরিবেশে পালিত হবে। এখানে কাঁচা পাকা সমাধি মিলিয়ে প্রায় ৬৫ হাজার সমাধি রয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৯০০ সমাধি রয়েছে, যাদের স্বজনরা এদেশে থাকে না। সেই সব সমাধিগুলোকে হলুদ রঙ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশিএ সমাধিতে কমিটির উদ্যোগে দীপালি উৎসবের দিন সন্ধ্যায় মোমবাতি, ধূপকাঠি ও প্রদীপ প্রজ্বালন করা হবে। বরিশাল মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি গোপাল সাহা বলেন, এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ দীপালি উৎসব এখানেই হয়ে থাকে। ভারত ও নেপালসহ বহু দেশ থেকে প্রচুর মানুষ এখানে আসে মৃত স্বজনদের স্মরণে। দীপালি উৎসবের দিন আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে মহাশ্মশান। বরিশালের পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলামের বলেন, দিপালী উৎসবের সময় মহাশ্মশান এলাকা নিরাপত্তার চাঁদরে ঢেকে দেয়া এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাঁজানো হয়েছে। যে কোন সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে সাথে সাথে রাষ্ট্রীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে তথ্য দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। প্রসঙ্গত, ৫ একর ৯৬ শতাংশের এই বরিশাল মহাশ্মশানে প্রতিবছর শ্মশান দীপালি উৎসবে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়। কেউ উৎসব দেখতে আসেন আবার কেউ স্বজনের সমাধিতে মোমবাতি প্রদীপ প্রজ্বালন করেন ও মৃত স্বজনের প্রিয় খাদ্যে দিয়ে স্মরণ এবং আত্মার শান্তি কামনা করেন। প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত, পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত, ব্রিটিশ বিরোধী নেতা বিপবী দেবেন ঘোষ, মনোরমা বসু মাসিমাসহ বহু খ্যাতিমান মানুষের সমাধি রয়েছে এই মহাশ্মশানে।