দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের কৃষক আহসান হাবিব রাসেল বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। তার প্রায় ৩৩ শতাংশ জমিতে গাছে গাছে এখন ঝুলছে হাজার হাজার মাল্টা। রাসেলের বাড়ি চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের উত্তর নশরতপুর গ্রামে। তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। নশরতপুর গ্রামেই তার দেখে আরো ১০ জন কৃষক মাল্টা চাষ শুরু করেছেন। আর চিরিরবন্দরে মাল্টা চাষে নেমেছেন কমপক্ষে অর্ধশত কৃষক। ২০১৭ সালে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা মাল্টা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার কার্যক্রম শুরু করেন। দ্বিতীয় শস্য বহুমুখী প্রকল্পের আওতায় কৃষি কার্যালয় থেকে বিনা মূল্যে বারি জাত-১ এর মাল্টা গাছের চারা সরবরাহ করা হয়। রাসেল প্রথমে ২৫ শতাংশ জমিতে ৫৬টি মাল্টার চারা রোপণ করেন। প্রায় দেড় বছর পরিচর্যার পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি গাছে বর্তমানে ৫০-১০০ টি ফল ধরেছে। রাসেল বলেন, প্রথম বছর স্বজনদের মধ্যে অনেক মাল্টা বিলিয়ে দিয়েও কিছু টাকা বিক্রিও করেছি। এ বছর শুরুতেই প্রতিটি গাছে ৫০-১০০ টি করে মাল্টা ধরেছে।র্ প্রথম বছর এর ফলন ও লাভের পরিমান বুঝে ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতা খাদেমুল ইসলামের পরামর্শে তার সাথেই আরো ৮ শতাংশ জমি বৃদ্ধি করে আরো ১৪টি চারা রোপন করি। বর্তমানে আমার ৩৩ শতাংশ জমিতে মোট ৭০টি গাছে মাল্টা ধরেছে। আর কিছুদিন গেলেই এই সব মাল্টা বাজারজাত করা সম্ভব হবে। ৫০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হবে এমনটাই আশা রাখছি। বর্তমানে রাসেলের ৩৩ শতাংশ জমিতে মাল্টার বাগানে পরিচর্যায় তার মা ও স্ত্রী নিয়মিত সহায়তা করছেন। রাসেলকে অনুসরণ করে মাল্টা চাষ করেছেন একই গ্রামের ফিরোজ আহমেদ(৪৫)। তিনি জানান, তিনি ২৫ শতাংশ জমিতে মাল্টা চাষ করেছেন। তার ৫৬ টি গাছে ৫০-৬০টি করে ফল ধরেছে। একইভাবে মাল্টা চাষ করছেন পাশের দক্ষিন নশরতপুর গ্রামের কাজল রহমান। তিনি জানান, গাছ লাগানোর এক বছর পরই ফল এসেছে। তবে প্রথমে পরিমাণ কম ছিল। এ বছর প্রতিটি গাছে প্রচুর ফল ধরেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, রাসেল একজন পরিশ্রমী কৃষক। তার মাল্টা চাষে বেশ ভালো ফল পাওয়া গেছে। তার বাগান দেখে এলাকার অন্য কৃষকরা মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। আগ্রহী ব্যক্তিদের উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।