ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আর এই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে উপজেলার প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠ গ্রহণ করছে। ১৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শুধুমাত্র ১৫টি বিদ্যালয়ে রয়েছে শহীদ মিনার। ভাষা শহীদদের স্মরণে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে কলা গাছের তৈরি কিংবা বিদ্যালয়ের দেওয়ালে আঁকা অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে প্রতিবছরই কালীগঞ্জ উপজেলার ১৩৫ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। প্রাথমিকের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষার ইতিহাস ও আন্দোলন-সংগ্রামের তাৎপর্যপূর্ণ ইতিহাস সম্পর্কে জানতে শহীদ মিনার থাকাটা জরুরী হলেও সরকারি অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার অভাবে বিদ্যালয় গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা যায়। ১৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলো সেগুলোর অবস্থাও জরাজীর্ণ। সরেজমিনে কালীগঞ্জ উপজেলা চত্বরে আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত শহীদ মিনারটি ভাঙাচোরা অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কামাল হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী রুপা ও পূজার সঙ্গে কথা হলে তারা জানায় ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদদের স্মৃতির উদ্দ্যেশে শ্রদ্ধা জানাতে তাদেরকে যেতে হয় কোলা বাজারের স্কুলে। সেখানে গিয়েই ফুল দেয় তারা। এজন্য শহিদ মিনারের সঙ্গে তার পরিচয় সেভাবে ছিলনা। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ দিন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শিক্ষকরা তাদেরকে শহিদ মিনার আঁকানো শিখিয়েছেন। ফলে তারা শহিদ মিনারের ছবি আঁকানো শিখলেও তা দেখেছে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। একই ইউনিয়নে ডিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার জানান, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় নিজেদের মতো করে আমরা দিবসটি পালন করছি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক ইনডোরে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, কুইজ এমন কিছু প্রোগ্রামও আমরা ঐ দিন করে থাকি।বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার না থাকায় এ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ধারণা অস্পষ্ট। তাই আমি মনে করি, প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই শহিদ মিনার থাকা খুব জরুরী। ঝিনাইদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, শিক্ষা অধিদপ্তর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যাপারে জানানো হয়েছে। অধিদপ্তর থেকে পাঠানো শহিদ মিনারের মডেল অনুযায়ী নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ম্যানেজিং কমিটির আর্থিক সহায়তায় শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য বলা হয়েছে। আমরাও সেভাবে বিদ্যালয় গুলোতে নির্দেশনা প্রদান করেছি। ধীরে ধীরে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের সংখ্যাও বাড়ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।