২০১৪ থেকে ২০১৭- এই তিন-চার বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে উন্নতির অনেক ছোঁয়া লেগেছে। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে শক্তিধর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। টেস্টে কিছু সাফল্য পেয়েছে। টি-টোয়েন্টিতেও নিজেদের গড়ে নিতে শুরু করেছিলো। কিন্তু নানা কারণে হঠাৎ করেই কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পদত্যাগ করে চলে যাওয়ার কারণে সেই উন্নতিতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বৈ কি।
যদিও বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতির এই পর্যায়ে কিছু বিতর্কও সঙ্গী হয়েছে হাথুরুর। তাকে কড়া হেডস্যার হিসেবেই দেখতে শুরু করেছিলো সবাই। জুনিয়রদের কথা দুরে থাক, সিনিয়রদেরও তিনি তোয়াক্কা করতেন না। এ কারণে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাথুরুর ঝামেলা লেগেছিলো বলে বাতাসে গুঞ্জন ছিল।
বলা হয়ে থাকে, হাথুরুর কারণেই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছিলেন মাশরাফি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে অনেকটাই সাইড করে ফেলা হয়েছিলো। সাকিবের সঙ্গে ঝামেলা তৈরি হয়েছিলো হাথুরুর।
দ্বিতীয় মেয়াদে যখন হাথুরুসিংহে বাংলাদেশে আসলেন, তখন আবারও সেই পুরনো প্রসঙ্গ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তখনকার ক্রিকেটারদের মধ্যে শুধু মাশরাফি নেই এখন। বাকি চারজনতো এখনও রয়েছেন। এমনকি সাকিব আল হাসানের বিষয়ে হাথুরু মন্তব্য করেছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
এসব বিষয়েই আজ জানতে চাওয়া হয় হাথুরুসিংহের কাছে। সোমবার রাতে ঢাকায় পৌঁছার পর আজ আনুষ্ঠানিকভাবে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। সেখানেই সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘সিনিয়রদের সঙ্গে কখনো আমার ঝামেলা ছিল বলে মনে করি না। আগেও কখনো অ্যাডজাস্টমেন্টে আমার সমস্যা হয়নি। এবারও হবে না।’
হাথুরু জানিয়েছেন, ঢাকায় এসেই সব ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সিনিয়রদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করছেন, এবার আর কোনো সমস্যা হবে না।
গুঞ্জন রয়েছে, সাকিবের কমিটমেন্ট নিয়ে নাকি প্রশ্ন তুলেছেন হাথুরু। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। কখনো এমন চিন্তাও করিনি, বলিওনি। সিনিয়রদের সঙ্গে সে অর্থে তেমন সমস্যা ছিল না। আশা করি হবেও না।’
সিনিয়র ক্রিকেটারদের ভূমিকাকে খাটো করে দেখবেন না কিংবা দলের মধ্যে সিনিয়রদের যে ভূমিকা রয়েছে, তা পরিবর্তন করবেন না বলেও জানালেন হাথুরুসিংহে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটে সিনিয়র ক্রিকেটাররা অনেক বড় অবদান রেখে যাচ্ছে। আমি মনে করি না যে তাদের এই ভূমিকায় খুব বেশি পরিবর্তন আনার প্রয়োজন রয়েছে।
ঢাকায় আসার পর মাত্র এক সপ্তাহ সময় পাচ্ছেন দল নিয়ে কাজ করার। এ স্বল্প সময় কতটুকু প্রস্তুতি নিতে পারবেন? কিংবা দলকে কতটা চিনতে পারবেন? জানতে চাইলে হাথুরু বলেন, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে আমি খেলোয়াড়দের অবজার্ভ করবো। নতুনদের মধ্যে যাদেরকে দেখিনি তাদেরকে দেখার চেষ্টা করবো। পুরনোদের সম্পর্কে তো জানি।’
‘আমাকে এখন শুধু খেলোয়াড় অবজার্ভেশন এবং যারা দল পরিচালনা করছে তাদের মতামতের ওপরই নির্ভর করতে হবে। নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আগে খেলোয়াড়দের দেখতে হবে এবং এরপর কাজ শুরু করতে পারবো।’