বিএফইউজে ও ডিইউজে’র যৌথ প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা
আইন মেনে সকল কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও অন্যায়ভাবে জাতীয় দৈনিক দিনকালের ডিক্লেয়ারেশন বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ছাড়া গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। এজন্য এই সরকারের পতন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। সংবাদমাধ্যমের শত্রু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রমাণ করেছে তারা ভিন্নমতের ক্ষীণ কন্ঠও সহ্য করতে পারে না। অবিলম্বে সাংবাদিক ও সাংবাদমাধ্যমের উপরে হয়রানিমূলক সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবি জানান শীর্ষ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। দৈনিক দিনকালের প্রকাশনা বন্ধের প্রতিবাদে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ।
গত সোমবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এইসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড প্রদক্ষিণ করে কদম ফোয়ারা মোড় হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এসে শেষ হয়। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র সভাপতি এম আবদুল্লাহ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও শওকত মাহমুদ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ’র সভাপতি মোরসালিন নোমানী, বিএফইউজের সিনিয়র সহ সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহ সভাপতি শাহীন হাসনাত, বাছির জামাল ও রাশেদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ প্রমুখ। সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন বিএনপির ভাইস চেযারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারি ও দৈনিক দিনকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাবেক ছাত্রনেতা ফজলুল হক মিলন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।
ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজুর সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ গাযী আনোয়ার, প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইন, দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, একেএম মহসীন, জাকির হোসেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য শহীদুল ইসলাম ও রফিক লিটন প্রমুখ।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার দিনকাল বন্ধ করেছে। দিনকাল বন্ধের প্রতিবাদ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ছাড়া গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। এজন্য এই সরকারের পতন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
শওকত মাহমুদ বলেন, এই সরকারের কাছে চাওয়ার কিছু নেই, কেড়ে নেয়ার সময় এসেছে। সকল বন্ধ মিডিয়া খুলে দিতে হবে, সকল কালাকানুন বাতিল করতে হবে। যারা এসবের সাথে জড়িত তাদের শাস্তি দিতে হবে। জনগণের সাথে মিলিত হয়ে চূড়ান্ত আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদী সরকারকে বিদায় করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, এই সরকারকে আর কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। বন্ধ মিডিয়া চালু করতে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে। ডিইউজে’র সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ৩৬ বছরের একটি পুরাতন পত্রিকা ফ্যাসিবাদী সরকার বন্ধ করে দিয়ে অসংখ্য সাংবাদিককে বেকার করে দিয়েছে। দিনকালের মতো অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অবিলম্বে দিনকাল পত্রিকা খুলে দিন। তা নাহলে সাংবাদিক সমাজ কঠোর জবাব দিবে। ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, দিনকাল বন্ধ করে সরকার আবারো ফ্যাসিবাদের প্রমাণ দিলো। অবিলম্বে দিনকাল পত্রিকা খুলে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
দৈনিক দিনকাল বন্ধে বিএনপির প্রতিবাদ
সরকারের নির্দেশে বিএনপির মুখপাত্র দৈনিক দিনকাল পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ জানানোসহ অবিলম্বে সরকারি এই অন্যায় আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও সদস্য সচিব শহদি উদ্দিন চৌধুরি এ্যানি।
বিএনপি মিডিয়া সেলের নেতারা অবিলম্বে সরকারের প্রতি আদেশ প্রত্যাহার করে দৈনিক দিনকাল প্রকাশের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। গতকাল বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির মিডিয়া সেলের নেতারা দৈনিক দিনকালের সাংবাদিকদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানাতে এসে এসব দাবি জানান। এ সময় দৈনিক দিনকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরি, মিডিয়া সেলের সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলালসহ দৈনিক দিনকালে কর্মরত সাংবাদিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।