বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আগামী দিনে আমরা বিজয়ী হব। যেসব পত্রিকা আওয়ামী লীগ অন্যায়ভাবে বন্ধ করেছে, সব খুলে দেয়া হবে। যেসব টিভি চ্যানেল বন্ধ করা হয়েছে সেগুলোও খুলে দেয়া হবে। ইনআশাল্লাহ।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বন্ধ, দৈনিক দিনকালসহ বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়া এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালা-কানুন বাতিলের দাবিতে পেশাজীবী পরিষদ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
নজরুল বলেন, গত কয়েকটি উপ-নির্বাচনে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভোট পড়েছে ২৪ থেকে ২৫ ভাগ। পরে নির্বাচন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগেরও অনেক কর্মী ভোট দিতে যায়নি। কারণ, সারাদেশের মানুষের মতো তারাও বিশ্বাস করে, ভোট দেয়া-না দেয়া একই কথা।
প্রশ্ন রেখে নজরুল আরো বলেন, এ দেশে ‘৭৫ সালে যারা একদলীয় স্বৈরশাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিল, ওই সরকারের একজন মন্ত্রী গলা উঁচু করে বলছেন, না না, একদল না। আমরা সব দল নিয়েই জাতীয় সরকার গঠন করেছিলাম। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ওই সময় কি বাংলাদেশে আরো কোনো রাজনৈতিক দল ছিল? আর কোনো দল ছিল না। বরং হয় বাকশাল না হয় নকশাল করেছিল। গেল ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সেটারই বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বহু রাজনৈতিক দল আছে কিন্তু তাদের কার্যক্রম করতে দেয়া হয় না।
নজরুল খান বলেন, চাটার দল সব খায়, যিনি বলেছিলেন, তিনি তো আর নেই। কিন্তু চাটার দল তো রয়েছে। যেখানে যা পায়, তারা সব খায়, কাবিখা, গরিব মানুষের ভাতা, শেয়ার মার্কেট ও ব্যাংক সব খেয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকও খাচ্ছে।
বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, এদেশের মানুষ এখন আর ভয় পায় না। তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ বইয়ে লেখে, সমাজতন্ত্র কায়েম করবে। অথচ প্রকাশ্যে চর্চা করে মুক্তবাজার অর্থনীতি। বইতে লেখে, রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম। কিন্তু চর্চা করবেন ধর্মনিরপেক্ষতা। এগুলো আপনাদের তামাশা। আপনারা যে সংবিধান নিয়ে তামাশা করেন, ওই সংবিধান দোহাই দিয়ে কি আপনারা জনগণের আন্দোলন প্রতিহত করতে চান! অসম্ভব। কেউ পারেনি, আপনারা পারবেন না। ইনশাআল্লাহ, আগামী দিনে আমরা বিজয়ী হব। যেসব পত্রপত্রিকা আপনারা অন্যভাবে বন্ধ করেছেন। সব পত্রিকা খুলে দেয়া হবে। যেসব টিভি চ্যানেল বন্ধ করেছেন, সেগুলো খুলে যাবে। ইনশাল্লাহ।
ডা এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, সাগর রুনি হত্যার পর ৫০ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে মামলা দিয়ে দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। এই আওয়ামী লীগ একেকবার একেক চেতনার কথা বলে। কখনো বলে ভাষার চেতনার কথা। কখনো বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কথা। আওয়ামী লীগ আইনের শাসনের কথা বললেও তারা তাতে বিশ্বাসী না। আমরা এ সমাবেশে যারা বসে আছি, কেউ নিরাপদ না। যেমন নিরাপদ ছিলেন না কাউন্সিলর চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলী, মাহমুদুর রহমান, আমার দেশ। মিডিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, যদি সত্য প্রকাশ করেন, তবেই আপনাদের পাশে জনগণ থাকবে। কারণ, কে কখন বন্ধ হয়, তা কেউ জানে না। যেমন দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি এ সরকারের গ্রাসের মুখে পড়ে আজ বন্ধ।
পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় ও আহ্বায়ক ডাক্তার জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়াপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, কবি আব্দুল হাই শিকদার, সাংবাদিক নেতা এম এ আজিজ, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।