অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলকে সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ। তিনি শহীদ ছাত্রনেতা সেলিম ও দেলোয়ারের ৩৯তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এক বাণীতে এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ২৮ ফেব্রুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৮৪ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা সেলিম ও দেলোয়ার স্বৈরাচারবিরোধী মিছিলে অংশ নিয়ে পুলিশের ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন।’
তিনি শহীদ ছাত্রনেতা সেলিম ও দেলোয়ারসহ গণতন্ত্রের জন্য আত্মোৎসর্গকারী সকল শহীদকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জন করি।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকচক্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার মাধ্যমে দেশে আবারো গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা রুদ্ধ করে। উত্থান ঘটে স্বৈরশাসনের।’
তবে, এ দেশের ছাত্রসমাজ সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর শহীদ সেলিম ও দেলোয়ারের মৃত্যুতে ঢাকাসহ দেশব্যাপী গণতন্ত্রকামী মানুষের মিছিলে প্রকম্পিত হয় রাজপথ, বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সারাদেশ। ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে স্বৈরাচারের পতন ত্বরান্বিত হয় এবং ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলে দেশে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এ গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলে সচেষ্ট থাকবেন – এটাই প্রত্যাশা।’