নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বের হয়ে গুলশানে নিজ বাসভবন ফিরোজা’য় ফেরেন তিনি। এর আগে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে গুলশানের বাসা থেকে রওয়ানা হয়ে বিকেল ৫টা ৩৩ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান খালেদা জিয়া। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। হাসপাতালে যাওয়ার পথে বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সবশেষ গত বছরের ২২ আগস্ট খালেদা জিয়া স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’র ধারা-৪০১ (১)-এর ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ওইদিনই হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফেরেন তিনি। একই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এরপর গত প্রায় তিন বছরে দফায় দফায় বাড়ে মুক্তির মেয়াদ। ৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া প্রায় তিন বছর ধরে গুলশানে নিজ বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন। ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল তার করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এর চারদিন পর ১৫ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তার সিটিস্ক্যান করানো হয়। ২৭ এপ্রিল করোনার চিকিৎসার জন্য প্রথম এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন।
ওই বছরের ১৯ জুলাই করোনার প্রথম ডোজ টিকা নেন খালেদা জিয়া। একই বছরের ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় ডোজ এবং গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় ডোজ টিকা নেন তিনি। গত বছরের ১১ জুন হঠাৎ বুকে ব্যথা নিয়ে মধ্যরাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। সেখানে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হার্টে একটি রিং বসানো হয়। ২৪ জুন বিকেল ৫টায় হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদ- দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। ওই বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদার সাত বছরের সাজা হয়।