সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন

ভুটানে কম দামে স্বর্ণ কিনতে পারবেন বাংলাদেশিরা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
ভুটানের জং মনাস্টারিতে একটি স্বর্ণমূর্তি

বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে অভিনব এক পন্থার আশ্রয় নিয়েছে হিমালয়ের কোলে অবস্থিত দেশ ভুটান। তারা সে দেশে আসা বিদেশি পর্যটকদের ডিউটি-ফ্রি বা শুল্কমুক্ত হারে স্বর্ণ কেনার সুযোগ দিচ্ছে, যার মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকরাও পড়ছেন। ভুটানে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম বাংলাদেশের তুলনায় অন্তত এক-তৃতীয়াংশ কম পড়বে বলেও প্রাথমিক হিসাবে দেখা যাচ্ছে।
আর বাংলাদেশ যেহেতু বিদেশ থেকে আসা নাগরিকদের প্রত্যেককে অন্তত বিশ ভরি (২৩৪ গ্রাম) স্বর্ণ নিখরচায় দেশে আনার অনুমতি দেয়, তাই কেউ এই কোটার পুরো ফায়দা তুললে ভুটানে স্বর্ণ কিনে প্রায় ৫ লাখ রুপি সাশ্রয় করতে পারবেন। এর ওপরে ১০০ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কারও বিনা শুল্কে বাংলাদেশে আনা যাবে।
তবে এই ডিউটি ফ্রি-হারে ভুটানে স্বর্ণ কেনার শর্ত একটাই; আপনাকে পর্যটক হিসেবে অন্তত একটি রাত ভুটানের ট্যুরিজম কাউন্সিলের অনুমোদিত কোনও হোটেলে কাটাতে হবে এবং সরকারের নির্ধারিত হারে এসডিএফ (সাসটেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট ফি) দিতে হবে।
এই এসডিএফের বর্তমান রেট এখন ভারতীয়দের জন্য দৈনিক মাথাপিছু ১২০০ রুপির মতো, আর অন্য বিদেশিদের জন্য ২০০ মার্কিন ডলার। তবে স্বর্ণের দামে ভুটান এতটাই ছাড় দিচ্ছে যে এসডিএফ দেওয়ার পরও পর্যটকরা স্বর্ণ কিনে বিপুল সাশ্রয় করতে পারবেন। গত শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভুটান সরকারের এই নাটকীয় সিদ্ধান্তটির কথা ঘোষণা করেন সে দেশের সুপরিচিত সাংবাদিক, দ্য ভুটানিজ পত্রিকার সম্পাদক এবং মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ভুটানের প্রেসিডেন্ট তেনজিং লামসাং। নিজের টুইটার হ্যান্ডল থেকে তিনি লেখেন, ‘পর্যটনের প্রসার ঘটাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এখন থেকে ভারতীয় বা এসডিএফ মাশুল দেওয়া অন্য পর্যটকরা ভুটানের ফুন্টশোলিং বা থিম্পুতে ট্যাক্স-ফ্রি রেটে স্বর্ণ কিনতে পারবেন। একমাত্র শর্ত হলো আপনাকে পর্যটন দফতর অনুমোদিত হোটেলে থাকতে হবে এবং এসডিএফ দিতে হবে। ভারতের তুলনায় এই স্বর্ণের দাম অনেক সস্তা পড়বে’, আরও জানান তিনি।
ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণের দাম যেহেতু বেশ খানিকটা বেশি, তাই বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে এই সাশ্রয়ের পরিমাণ যথারীতি আরও বেশি হবে। তেনজিং লামসাং পরে আর একটি টুইটে একটি ‘আপডেট’ যোগ করে জানান, ভুটানে স্বর্ণ কেনার জন্য ভারতীয়দের মার্কিন ডলার নিয়ে আসতে হবে। একই কথা বাংলাদেশিদের জন্যও প্রযোজ্য। অর্থাৎ রুপি বা টাকা দিয়ে ভুটানে স্বর্ণ কেনা যাবে না– কিনতে হবে ডলার দিয়েই।
এখন প্রশ্ন হলো, এসব শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশি বা ভারতীয়রা যদি ভুটানে স্বর্ণ কেনেন, তাহলে তাদের ঠিক কতটা লাভ হতে পারে? তারিখে (২৬ ফেব্রুয়ারি) ভারতের বাজারে ১০ গ্রাম ওজনের ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ৫৭ হাজার ৪৯০ রুপি। একই সময়ে, ভুটানে ডিউটি-ফ্রি রেটে একই মান ও পরিমাণের স্বর্ণের মূল্য হবে ৪০ হাজার ২৮৬ ভুটানিজ ন্যুলট্রাম। এখন ভারতীয় ও ভুটানিজ কারেন্সির বিনিময় মূল্য যেহেতু প্রায় সমান (১ রুপি = ১ ন্যুলট্রাম), তাই ভারতীয়দের জন্য ভুটানে এই স্বর্ণের দাম পড়বে ৪০ হাজার ২৮৬ রুপি। অর্থাৎ প্রতি ১০ গ্রামে ভারতীয়রা ১৭ হাজার রুপিরও বেশি লাভ করতে পারবেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন চলতি মাসে (ফেব্রুয়ারি ২০২৩) সর্বশেষ খুচরা বাজারে যে স্বর্ণের দাম নির্ধারিত করেছে তাতে ১০ গ্রাম ওজনের ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম পড়ছে ৭৯ হাজার ১০০ বাংলাদেশি টাকা। (২৪ ক্যারেটের দাম আরও বেশি)। উল্লেখ্য, ১১ দশমিক ৬৬ গ্রামে এক ভরি। ১০০ ভারতীয় রুপি সমান ১২৭ দশমিক ৯ বাংলাদেশি টাকা ধরলে বাংলাদেশে এই পরিমাণ স্বর্ণের দাম পড়ছে ৬১ হাজার ৮৩৭ ভারতীয় রুপি বা সমপরিমাণ ভুটানিজ ন্যুলট্রাম। ফলে ভুটানের দামে ওই স্বর্ণ কিনতে পারলে বাংলাদেশিরা প্রতি ১০ গ্রামে প্রায় ২২ হাজার রুপি বা ২৮ হাজার টাকার মতো সাশ্রয় করতে পারবেন।এর পাশাপাশি, ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) প্রত্যেক ভারতীয় পুরুষকে ৫০ হাজার রুপি মূল্যের ও প্রত্যেক ভারতীয় নারীকে এক লাখ রুপি মূল্যের স্বর্ণ বিনা শুল্কে দেশে আনতে দেয়। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই পরিমাণটা অনেক বেশি। প্রত্যেক বাংলাদেশি নারী-পুরুষ বিদেশ থেকে বিশ ভরি পর্যন্ত স্বর্ণ বিনা শুল্কে আনতে পারেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com