১২ দলীয় জোটের নেতারা বলেছেন, সরকার জনগণের ভোটাধিকার আদায়ে বিরোধী দলের আন্দোলনে ভ্রুক্ষেপ করে না। তারা ২০১৪ সালের বিনা ভোটের নির্বাচন ও ২০১৮ সালের জালিয়াতি ভোটের মতো অসৎ উপায় উদ্ভাবনের নেশায় বিভোর হয়ে আছে। জনগণ সরকারের এই অশুভ চিন্তা ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন হতে দেবে না।
গতকাল শনিবার (৪ মার্চ) সকালে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন রাস্তায় পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে ১২ দলীয় জোটের নেতারা এ কথা বলেন।
সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, সরকারের পদত্যাগ, বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোসহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এ পদযাত্রা কর্মসূচি করেছে ১২ দলীয় জোট।
পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে ১২ দলীয় জোটের নেতারা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সভা সমাবেশের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্খা তুলে ধরছি। সরকারের মতিগতি দেখে মনে হচ্ছে না যে তারা সমস্যা সমাধানের দিকে যাচ্ছে। তারা জনগণের ভোটাধিকার আদায়ে বিরোধী দলের আন্দোলনে ভ্রুক্ষেপ না করে ২০১৪ সালের বিনা ভোটের নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের জালিয়াতি ভোটের মতো কোনো অসৎ উপায় উদ্ভাবনের নেশায় বিভোর হয়ে আছে। জনগণ সরকারের এ অশুভ চিন্তা ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন হতে দেবে না।
বক্তারা বলেন, আসন্ন রমজানের আগে এক মাসের ব্যবধানে বিদ্যুতের তিনবার মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনজীবনে দুর্বিসহ দুর্ভোগ নেমে আসবে। দেশের অবস্থা দিনে দিনে ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। ১৫০ টাকার ব্রয়লার মুরগি ২৫০ টাকায় উঠেছে, ৯০ টাকা ডজনের ফার্মের মুরগির ডিম ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশে নীরব দূর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। গণ-হাহাকারের ধ্বনি সরকারের কানে পৌঁছাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে আবারো বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করেছে। দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে না ধরে আরো মূল্যবৃদ্ধির ব্যবস্থা করে মানুষের সাথে নিষ্ঠুর তামাশা করে যাচ্ছে।
তারা আরো বলেন, সরকার জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বরদাস্ত করতে পারে না, সন্ত্রাসি হামলা, মামলা করে আন্দোলনকে বাধা প্রদান করছে। সেই সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করলে কিভাবে বিরোধী দলকে নির্বাচনের মাঠে নির্বিগ্নে প্রচারণা ও জনগণকে ভোট দিতে দিয়ে নিজেদের নিশ্চিত পরাজয় মেনে নেবে তা দেশ-দুনিয়ার কোনো মানুষকে বিশ্বাস করানো যাবে না।
বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি করে নেতারা বলেন, সরকারের অনমনীয় মনোভাব সামগ্রিকভাবে আন্দোলনকে এক দফা সরকার পতনের দাবির দিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করছে। জনগণ রাজপথে নেমে সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ-তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে। এমন একটা পরিস্থিতির দিকেই দেশবাসী ও দুনিয়া তাকিয়ে আছে।
জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিবের স ালনায় পদযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গনি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ন্যাপ-ভাসানী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব আবু হানিফ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা তারিকুল ইসলাম। পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামসহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।