করোনা পরিস্থিতিতে মৌসুমি সবজি চাষ করে মাগুরার কৃষকরা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে রাশেদ মোল্যা অন্যতম। তিনি বারোমাসি সবজি হিসেবে লাউ, করলা, কলা চাষে সাফল্য দেখিয়েছেন।
কৃষক রাশেদ মোল্যা জানান, ১০ বছর ধরে তিনি নানামুখী সবজি চাষ করছেন। কিন্তু করোনাকালে তিনি সবজি চাষে বিভিন্ন ভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছেন। চাষের বীজ, সার সংগ্রহ করতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তার। তাছাড়া চাষের বীজ ও অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়েছে। এ বছর তার করলা চাষে ক্ষতি হলেও বর্তমানে লাউ চাষে আলোর মুখ দেখছেন তিনি। তার নিজের কোনো জমি নেই। বর্তমানে তিনি পারনান্দুয়ালী পূর্বপাঠ পাড়ায় ৫০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে বারোমাসি এ লাউ চাষ করছেন। লাউ চাষের জন্য জমি তৈরি, জমিতে বাঁশের টাল তৈরি, সার ও বীজ দিয়ে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে তিনি চাষাবাদে খরচ করেন। প্রতি ১৫ দিন অন্তর জমিতে সার দিতে হয়। এতে তার খরচ হয় ১ হাজার টাকা। তিনি বলেন, বর্তমানে বারোমাসি লাউ চাষে লাভবান হয়েছেন। দুদিন পর পর ক্ষেত থেকে ৮০-১০০ পেঁস লাউ সংগ্রহ করেন। এ লাউ পাইকারি হিসেবে কাঁচাবাজারে প্রতি পেঁস ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি করেন। প্রতি মাসে তার বিক্রি ৩০-৩২ হাজার টাকা।
বছরে তিনি বিক্রি করছেন প্রায় ৩ লাখ টাকা। বছরে তার উৎপাদন খরচ বাদে ২ লাখ টাকা থাকছে। লাউ চাষে খরচ কম কিন্তু লাভ বেশি। তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেক কৃষক এই চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষক রাশেদ মোল্যা জানান, মাগুরা কৃষি অফিস থেকে আমাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জানান, কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকদের পাশে থেকে মাঠ তদারকি করছে এবং প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি সরবরাহ করছে। তিনি বলেন, লাউয়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন আছে যেমন- সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন সি ও ফাইবার। লাউ সুগার ফ্রি, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি উপকারি সবজি। লাউয়ে পানি থাকে বিধায় খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। লাউ চাষ অল্প খরচে অধিক লাভজনক বলে কৃষকদের লাউ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।