জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, আমরা চাই ১ লাখ ২৭ হাজার জনই যেন নির্বিঘেœ হজে যেতে পারেন। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিতে হবে হজের জন্য। হজ ফান্ড করতে হবে। আমরা সবাই হজ ফান্ডে টাকা দিতে চাই। দেশের মানুষ হজের জন্য ফান্ডে টাকা দিতে প্রস্তুত আছেন। সকলে যেন অর্ধেক খরচে হজে যেতে পারেন, সে উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে জাতীয় তরুণ পার্টির সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতির কারণে হজযাত্রীদের জন্য জনপ্রতি প্রায় ৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য খরচসহ এই খরচ ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আগে হজ নিবন্ধনের জন্য মানুষ তদবির করতো, এখন হাজার হাজার মানুষ নিবন্ধন বাতিল করছে। ২৩শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ১৭ হাজার মানুষ নিবন্ধন করেছিলো হজের জন্য। সময় বাড়ানোর কারণে এখন মাত্র ৫০ হাজারের কিছু বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছে।
অথচ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে প্রায় অর্ধেক খরচে সেদেশের মানুষ হজ পালন করতে পারছেন।
জিএম কাদের বলেন, কারো স্বার্থ রক্ষার জন্য আমরা রাজনীতি করি না। আমাদের রাজনীতি জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য। জনগণের পছন্দে জনপ্রতিনিধি হতে হবে। আমরা জনগণের সকল অধিকার রক্ষা করতেই রাজনীতি করছি। আমরা কোনো দলের বি-টিম নই। আমরা গণমানুষের টিম হতে রাজনীতি করছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা লক্ষ-কোটি টাকা ব্যয়ে খেলনা বানাচ্ছি। দেখার জন্য দৃষ্টিনন্দন শোভা বানাচ্ছি। দেশের মানুষের আয় বাড়ছে না, কিন্তু প্রতিদিনই দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। সাধারণ মানুষ সংসার চালাতে পারছে না। এখন ২৫০ গ্রাম মাংস বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু ক্রেতা নেই। গরুর মাংস প্রায় ৮শ’ টাকা হয়েছে। অথচ পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়ে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে। আমদানীকারকরা চিনির কেজি ৫শ’ টাকা ঘোষণা করলে, সেই দামেই চিনি কিনতে হবে। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না। গ্রামের মানুষ বাজার করতে পারছে না। খুব সামান্য মানুষ ভালো আছেন। দেশের বেশির ভাগ মানুষই অবর্ণনীয় কষ্টে আছেন।
সভায় জাপা মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস করেছে। তারা বারবার ক্ষমতায় গিয়ে ইচ্ছে মতো দেশ চালিয়েছে। দুর্নীতি, লুটপাট, টেন্ডারবাজি ও দলবাজির কারণে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হাত থেকে মুক্তি চায়। ঐ দুটি দলের কথা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছে, তারাই এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধীতা করছে। আবার যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিরোধিতা করেছে তারাই এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করছে। দুটি দলই প্রমাণ করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা আনুপাতিক হারে নির্বাচনের পক্ষে। আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলেই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে।
জাতীয় তরুণ পার্টির আহ্বায়ক জাকির হোসেন মৃধার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মোড়ল জিয়াউর রহমান এর সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, সাবেক এমপি গোলাম রব্বানী।