রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৮৯তম জন্মবার্ষিকী নগরকান্দায় দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ওসি, সাংবাদিকসহ আহত- ৩০ কালীগঞ্জে নানা সংকটে গ্রাম আদালত সুফল পেতে প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ কটিয়াদীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ মুন্সীগঞ্জে লুন্ঠিত মালামালসহ ৭ ডাকাত গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বর্ণিল পিঠা উৎসব ছয় মাসেও উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ অন্তঃস্বত্তা গৃহবধূ স্বপ্না হিলির রেললাইনের ধারে খেজুর রস নামাতে ব্যস্ত গাছিরা মোহাম্মদিয়া ইসলামী যুব সংঘের উদ্যোগে তাফসীরুল কোরআন মাহফিল সম্পন্ন গাইবান্ধায় ছোটবোন ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে নির্যাতিত গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন

তৈমুর লং এর ভারত আক্রমণের কারণ ও ফলাফল

॥ জীবন মুখোপাধ্যায় ॥
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০২৩

ফিরোজ শাহের মৃত্যুর পর তাঁর পৌত্র দ্বিতীয় গিয়াসউদ্দিন তুঘলক দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। তাঁর রাজত্বকাল থেকে দিল্লী সুলতানী দ্রুত পতনের দিকে অগ্রসর হয়। ফিরোজের মৃত্যুর পর ষোল বছরের মধ্যে পর পর ছয়জন সুলতান সিংহাসনে বসেন, কিন্তু কেউই শাসনকার্যে যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারেন নি। এই বংশের শেষ সুলতান নাসিরউদ্দিন মামুদ শাহ-এর রাজত্বকালে (১৩৯৪-১৪১২ খ্রিঃ) ভারতবর্ষ এক ভয়াবহ বৈদেশিক আক্রমণের সম্মুখীন হয়। এই আক্রমণের নায়ক সমরখন্দের অধিপতি তৈমুর লঙ্।
ভারত অভিযানের কারণ: সমরখন্দের চাদ্ভাই তুর্কীদের নেতা তৈমুর লঙ্ দুর্র্ধষ সমরকুশলী বীররূপে ইতিহাসে সুপ্রসিদ্ধ। তেত্রিশ বছর বয়সে পৈতৃক সমরখন্দ রাজ্যের সিংহাসনে বসে অল্পকালের মধ্যেই তিনি পারস্য, আফগানিস্তান ও মেসোপটেমিয়া জয় করে অদ্বিতীয় বীররূপে খ্যাতি অর্জন করেন। যুদ্ধের সময় তাঁর একটি পা নষ্ট হয়ে গেলে তিনি ‘ল’ বা খোঁড়া বলে পরিচিত হন। ভারতের অতুল ঐশ্বর্য এবং তুঘলক শাসকদের দুর্বলতা তাঁকে ভারত অভিযানে প্রণোদিত করে। ভারতে স্থায়ীভাবে কোন সাম্রাজ্য স্থাপনের ইচ্ছা তাঁর ছিল না। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য ছিল ভারতের ধনরতœ লুণ্ঠন ভারত অভিযানের উদ্দেশ্য করা। ভারত আক্রমণ: ১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দে তৈমুরের পৌত্র পীর মহম্মদ মুলতান দখল করেন। এই বছরেই তৈমুর সমরখন্দ থেকে বিশাল সেনাবাহিনী-সহ যাত্রা করে সিন্ধু, ঝিলাম ও রাভী অতিক্রম করে রাজধানী দিল্লী অভিমুখে অগ্রসর হন। পথিমধ্যে দীপালপুর, ভাতনার প্রভৃতি জনপদ তাঁর দ্বারা লুণ্ঠিত হয় এবং তিনি বহু নরনারীকে হত্যা করেন। দুর্বল নাসিরউদ্দিন মামুদ শাহ তাঁর কাছে পরাজিত হয়ে গুজরাটে পলায়ন করেন। দিল্লীতে প্রবেশ করে (১৮ই ডিসেম্বর ১৩৯৮ খ্রিঃ) তৈমুর ও তাঁর সেনাদল দীর্ঘ পনের দিন ধরে যথেচ্ছ লুণ্ঠন ও হত্যাকা- চালান এবং প্রভূত ধনরতœ ও অসংখ্য বন্দীসহ স্বদেশ অভিমুখে যাত্রা করেন (১৩৯৯ খ্রিঃ)। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পথে ফিরোজাবাদ, মীরাট, হরিদ্বার ও জম্মু অঞ্চলে তাঁর সেনাবাহিনী যথেচ্ছ লুণ্ঠন চালায় এবং তিনি কাংড়া দখল করেন। ভারতত্যাগের পূর্বে তিনি খিজির খাঁ-কে মুলতান, লাহোর ও দীপালপুরের শাসনকর্তা নিযুক্ত করে যান। ফলাফল: তৈমুরের ভারত আক্রমণের ফলে কেবলমাত্র উত্তর ভারতের জনজীবন ও বিপুল পরিমাণ সম্পত্তিই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় নি Í সারা দেশ জুড়ে এক চরম নৈরাজ্য ও অরাজকতার সূত্রপাত হয়। তৈমুরের বর্বরোচিত আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত হয় দুর্ভিক্ষ, অনাহার ও মহামারী। দিল্লী নগরী শ্মশানে পরিণত হয়। ঐতিহাসিক বদাউনী লিখেছেন যে, তৈমুরের হাত থেকে যারা নিষ্কৃতি পেয়েছিল তারা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারায় এবং এর ফলে দিল্লীর জনসংখ্যা এত কমে গিয়েছিল যে দিল্লীর আকাশে দু’মাস ধরে একটি পাখীকেও উড়তে দেখা যায়নি। লক্ষ লক্ষ মানুষের সঙ্গে গবাদি পশুও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এর ফলে দেশে অজন্মা দেখা দেয় এবং খাদ্যসংকট চরম আকার ধারণ করে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। সমগ্র উত্তর ভারতে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। প্রদেশগুলি একে একে স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং সুলতানী সাম্রাজ্যের পতন ত্বরান্বিত হয়। তথ্য সূত্র: স্বদেশ পরিচয় ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com