১৮৮১ সালের ০৬ই আগস্ট জন্ম নেয়া এই বিজ্ঞানী পাল্টে দিয়েছিলেন চিকিৎসাজগতকে, এবং তদুপরি মানবজাতিকে। তার সবচেয়ে বড় আবিষ্কার ছিলো এন্টিবায়োটিক পেনিসিলিন। আর ওনার নাম আলেকজান্ডার ফ্লেমিং। স্কটল্যান্ডে জন্মেছিলেন তিনি। এরপর এক সময় ইংল্যান্ডের লন্ডনে চলে যান। বড় ভাই চিকিৎসক ছিলেন। তার পরামর্শেই তিনিও এমবিবিএস পড়তে ভর্তি হয়েছিলেন। ১৯০৬ সালে বিশেষ কৃতিত্বের সাথে এমবিবিএস শেষ করার পর, ১৯০৮ সালে গিয়ে ব্যাকটেরিয়াবিদ্যাতে অনার্স করলেন। সেটাতে আবার স্বর্ণপদকও পেয়ে গেলেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করবে এমন কিছু নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তখনই তিনি এন্টিসেপটিক নিয়ে দুর্দান্ত একটা ফলাফল বের করেছিলেন। বলেছিলেন যে এন্টিসেপটিক চামড়ার ওপরে কাজ করলেও ভেতরের দিকে এমন ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় রয়ে যায় যা অক্সিজেন ছাড়াও চলতে পারে, এবং এটা অনেক যুদ্ধে আহত রোগীর অবস্থা আরো খারাপ করে দিচ্ছে। যাই হোক, এই আবিষ্কার তখন অনেকেই কানে তোলেনি।
তার সবচেয়ে বিখ্যাত আবিষ্কারটা ছিলো পুরোপুরি কাকতালীয় অথবা দৈবক্রমে। গবেষক বড় মাপের হলেও তার গবেষণাগার পুরোপুরি টিপটপ থাকতো না। ১৯২৮ সালের আগস্ট মাসে তিনি গিয়েছিলেন এক মাসের ছুটিতে। ছুটি কাটানোর আগে তিনি Staphylococcus ব্যাকটেরিয়ার পেট্রিডিশগুলোকে তাক তাক করে সাজিয়ে রেখে গিয়েছিলেন। সেপ্টেম্বরে ফিরে এসে দেখেন, একটার মধ্যে ছত্রাকের আক্রমণ ঘটেছে, এবং ছত্রাকের আশেপাশে ব্যাকটেরিয়াগুলো মারা গেছে। তিনি বলেছিলেন, “১৯২৮ সালের সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখে ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠার পর আমার প্ল্যান কোনোভাবেই এমন ছিলো না যে আমি পৃথিবীর প্রথম ব্যাকটেরিয়া-হত্যাকারী বা প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করে চিকিৎসার জগতে বিপ্লব নিয়ে আসবো। কিন্তু হয়তো, ঠিক সেটাই আমি করে ফেলেছি।”
এই আবিষ্কারের জন্য তিনি যৌথভাবে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন ১৯৪৫ সালে। পুরষ্কারের বাকি দুজন ভাগীদার ছিলেন Howard Florey Avi Ernst Boris Chain. ১৯৪৬ সালে রাজা ষষ্ঠ জর্জ তাকে নাইট উপাধি দেন, তাই তাকে স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ডাকা হয়। ১৯৫৫ সালের ১১ই মার্চ তিনি হার্ট এটাকে মারা যান। তার একটা মূর্তি আছে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে। ওসধমব: Image: Carlos Vinas, Flickr Photo
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি, উইকিপিডিয়া, নোবেলপ্রাইজ.অর্গ