খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের দুর্গম গোমতীর বামা এলাকায় মাটি খুঁড়ে কালো সোনা খ্যাত কয়লার খনির সন্ধান পেয়েছে স্থানীয়রা। গতকাল শুক্রবার (১০ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসী কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ে কয়লা বের করে নিয়ে যাচ্ছে। সেই কয়লা শুকিয়ে তারা রান্নার কাজেও ব্যবহার করছে। সেখানে বেশ কয়েকটি জায়গায় এমন কয়লা আছে বলে জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক বছর আগে দুর্গম পাহাড়ে কৃষি কাজ করার উদ্দেশ্যে মাটি খনন করতে গিয়ে এ কয়লার সন্ধান পাওয়া যায়। কয়লার খনি দেখতে প্রতিদিনই মানুষজন ছুটে আসছেন। রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবি জানান তারা।
স্থানীয় কৃষক মো. হানিফ বলেন, ‘বছর খানেক আগে আদা-হলুদ রোপণের জন্য মাটি খনন করতে গিয়ে কয়লা দেখতে পাই। পরে কৌতূহলী হয়ে এসব কয়লা সংগ্রহ করে আগুনে পুড়িয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। অন্যদের জানালে অনেকেই আগ্রহী হয়ে সেসব কয়লা সংগ্রহ করে পারিবারিক কাজে ব্যবহার করছে।’ আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইউনুছ মিয়া বলেন, বামা এলাকায় কয়লা পাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। সরকার যদি যাচাই-বাছাই করে কয়লা উত্তোলন করে, তাহলে বর্তমান দেশের যে জ্বালানি সংকট রয়েছে কিছুটা হলেও সেই ঘাটতি পূরণ হবে। দুর্গম পাহাড়ে কয়লা পাওয়ার বিষয়টি সঠিক হলে পাহাড়ের জন্য তা বড় পাওয়া হবে বলেও মনে করেন তিনি।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন বলেন, ‘সরকারের জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে হবে। কয়লার খনির সন্ধান পাওয়া গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।’ আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গণি বলেন, ‘বামা এলাকায় কয়লার খনি পাওয়ার বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হলে দেশে বিদ্যমান কয়লা ঘাটতি পূরণ হবে। বিদ্যুতের যে জ্বালানি সঙ্কট রয়েছে তাও দূরীভূত হবে।’
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘মাটিরাঙ্গা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের গোমতী বামা এলাকায় কয়লার খনি পাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। স্থানীয়রা জ্বালানি হিসেবে সেই কয়লা ব্যবহারও করছেন। সংশ্লিষ্ট নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠানোর জন্য বলেছি। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’